কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরকে রঞ্জন সিংহের ভস্মীভূত বাড়ি। ছবি: সংগৃহীত।
মণিপুরের গোষ্ঠীহিংসায় এ বার আক্রান্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বাড়ি! বৃহস্পতিবার রাতে কোঙ্গবা এলাকায় কেন্দ্রীয় বিদেশ প্রতিমন্ত্রী রাজকুমার রঞ্জন সিংহের বাড়িতে হামলা চালায় উন্মত্ত জনতা। পেট্রোল বোমা ছুড়ে আগুন ধরানো হয় তাঁর বাড়িতে! প্রশাসন সূত্রের খবর, মন্ত্রী রঞ্জন সে সময় বাড়িতে ছিলেন না। ওই এলাকায় দুষ্কৃতীদের গুলিতে কয়েক জনের মৃত্যুর জেরেই মেইতেই জনগোষ্ঠীর নেতা রঞ্জনের বাড়িতে এই হামলা বলে মনে করা হচ্ছে।
কার্ফু উপেক্ষা করেই রাজধানী ইম্ফলের লাগোয়া ওই এলাকায় হাজারেরও বেশি মানুষ জড়ো হয়ে হামলা চালান কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বাড়িতে। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার মণিপুর সরকারের একমাত্র মহিলা মন্ত্রী কাংপোকপি কেন্দ্রের বিধায়ক নেমচা কিগপেনের বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছিল বিক্ষুদ্ধ জনতা। কুকি জনগোষ্ঠীর নেত্রী নেমচার বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্টতা এবং হিংসায় মদতের অভিযোগ এনেছিলেন মেইতেই গোষ্ঠীর কয়েক জন নেতা।
রঞ্জন জানিয়েছেন, বাড়িতে হামলার সময় তিনি কেরলের কোচিতে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা শান্তি ফেরানোর জন্য প্রাণপণে চেষ্টা করছি। কিন্তু কিছু শক্তি আছে, যারা চায় না মণিপুরে শান্তি ফিরুক।’’ প্রসঙ্গত, গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত হয়েছিল উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ওই রাজ্যে। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে।
মণিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জ়ো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান) সংঘর্ষ ঠেকাতে গত ৬ মে মণিপুরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। নামানো হয় সেনা এবং অসম রাইফেলস বাহিনীকে। কিন্তু দেড় মাসেও শান্তি ফেরেনি সেখানে। নিহতের সংখ্যা ১২০ ছুঁতে চলেছে। ঘরছাড়া অন্তত ৫০ হাজার মানুষ।