TMC

‘প্রার্থী না পাল্টালে হারব’, সভায় শুনলেন অনুব্রত

প্রথম দিকে ভালই চলছিল প্রশ্নোত্তর পর্ব। অনুব্রত মণ্ডল এক সময় বসন্তপুর গ্রামের বুথ সভাপতিকে প্রশ্ন করেন, “জয়ের ব্যবধান কি আরও বাড়বে?’’ কেননা, লোকসভা ভোটের হিসেবে এই গ্রামের ৭১ নম্বর বুথে তৃণমূল ২৯৭ ভোটে এগিয়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

নলহাটি শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২০ ০৩:৪০
Share:

নলহাটি হরিপ্রসাদ হাইস্কুলের সভায়। নিজস্ব চিত্র

বিধানসভা ভোটে প্রার্থী বদল না-হলে তাঁর বুথে ‘তৃণমূলের ভোট শূন্য হবে’ বলে জেলা তৃণমূলের সভাপতির কাছে আশঙ্কা প্রকাশ করলেন এক বুথ সভাপতি। সোমবার নলহাটি হরিপ্রসাদ হাইস্কুলে নলহাটি ১ নম্বর ব্লকের অঞ্চল ভিত্তিক বুথকর্মী সম্মেলন হয়। সেখানেই এমন অভিযোগ করেন পাইকপাড়া অঞ্চলের বসন্ত গ্রামের বুথ সভাপতি আবুল হাসনাত।

Advertisement

প্রথম দিকে ভালই চলছিল প্রশ্নোত্তর পর্ব। অনুব্রত মণ্ডল এক সময় বসন্তপুর গ্রামের বুথ সভাপতিকে প্রশ্ন করেন, “জয়ের ব্যবধান কি আরও বাড়বে?’’ কেননা, লোকসভা ভোটের হিসেবে এই গ্রামের ৭১ নম্বর বুথে তৃণমূল ২৯৭ ভোটে এগিয়ে। জবাবে বুথ সভাপতি বলেন, “প্রার্থী বদল না করলে আমরা শূন্য হয়ে যাব। বদল করলে বিরোধীরা শূন্য হয়ে যাবে।’’

অভিযোগ, এই কথা বলার পরেই তাঁর হাত থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে নেন নলহাটি পুরপ্রধান রাজেন্দ্রপ্রসাদ সিংহ। অনুব্রত বিষয়টি আর না বাড়িয়ে বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পাইকপাড়া অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য সুপারিশ করব। আমি বিধায়ক বা সাংসদ নই। তাই অনুরোধ করা ছাড়া কিছু করার নেই।’’

Advertisement

এমন কথা কেন বললেন? সভা শেষে সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে হাসনাত বলেন, “বিধায়ক মইনুদ্দিন সামস প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এলাকায় পানীয় জলের ব্যবস্থা করে দেবেন। কিন্তু, ভোটের পরে আর গ্রামে যাননি। আজও গ্রামের মানুষ জলকষ্টে ভুগছেন। রাস্তাঘাটও অনুন্নত। তাই স্থানীয় প্রার্থীর কথা বলেছি।’’ এই প্রসঙ্গে নলহাটির বিধায়ক বলেন, “যখন জয়ী হই, তখন নলহাটি বিধানসভায় পাহাড়প্রমাণ সমস্যা ছিল। অনেক সমাধান করেছি। বসন্ত গ্রামেও পানীয় জলের জন্য সাবমার্সিবল বসানোর কাজ চলছিল। কিন্তু, সেখানে জলস্তর অনেক নীচে থাকায় বসানো সম্ভব হয়নি।’’

এ দিকে, সভার শুরুতে অঞ্চল ও বুথের সভাপতিদের ধরে ধরে লোকসভার ফলাফল খারাপ হল কেন তা জানতে চান জেলা সভাপতি। কুরুমগ্রাম অঞ্চলের ২৩টি বুথের মধ্যে ১৪টিতে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। ১২৮ নম্বর বুথে তৃণমূল ৫২৯ ভোটে বিজেপির কাছে পিছিয়ে। বুথ সভাপতি সঞ্জয় লেট বলেন, “কংগ্রেস, বিজেপি ও সিপিএম জোট করে ভোট করেছিল বলেই ওই ফল হয়েছে।’’ জেলা সভাপতি প্রশ্ন করেন, সরকারের কতগুলো প্রকল্প আছে? সঞ্জয় ৫৪টি জানালে ক্ষুব্ধ অনুব্রত বলেন, “৬৫টি প্রকল্প। ৫৪ কেন বলছেন?’’ সঞ্জয় জবাব দেন, “ব্লক থেকে ৫৪টি প্রকল্পের নাম ছেপে বিতরণ করা

হয়েছে।’’ সেই শুনে অনুব্রত ব্লক সভাপতি অশোক ঘোষের উদ্দেশে বলেন, “যিনি ছেপেছেন তিনি মাথা মোটা। দল করেন না। বুদ্ধিশুদ্ধি নেই।’’ যদিও ব্লক সভাপতি অশোক ঘোষ জানান, জেলা থেকেই ওই তালিকা নিয়ে সেটা ছাপিয়ে বুথ সভাপতিদের মধ্যে বিলি করেছেন।

বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডলের মন্তব্য, ‘‘আগে জেলা সভাপতি ও নেতাদের ভয় করতেন কর্মীরা। এখন তাঁরা প্রশ্ন করছেন। যদি এই সব প্রতিবাদী বুথ সভাপতি ও কর্মীদের তৃণমূল বহিষ্কার করে, তা হলে তাঁদের জন্য বিজেপির দরজা খোলা আছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement