মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল ছবি
আগামী ৭ জানুয়ারি নন্দীগ্রামের তেখালির সভায় যোগ দিচ্ছেন না তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মমতা না গেলেও প্রস্তাবিত সভাটি হবে। মমতার জায়গায় ওই সভায় থাকবেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। সোমবার এমনই জানিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের অন্যতম কো-অর্ডিনেটর তথা রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি। ২০০৭ সালের শুরুতে নন্দীগ্রামে যে আন্দোলন হয়েছিল, সেই ক্যালেন্ডারে গুরুত্বপূর্ণ দিন হল ৭ জানুয়ারি। জমি আন্দোলনে ওই দিন তিন জনের মৃত্যু হয়েছিল। মূলত সেই কারণেই তৃণমূল প্রতি বছর সেখানে ‘শহিদ স্মরণে কর্মসূচি’-তে বড় সমাবেশ করে। এ বার মমতা ওই দিন নন্দীগ্রামে সভা করতে চেয়েছিলেন। তৃণমূলগত ভাবে অবশ্য পূর্বঘোষিত সভা হচ্ছে। কিন্তু সেখানে থাকছেন না মমতা। অন্তত অখিল তেমনই জানাচ্ছেন।
কেন মুখ্যমন্ত্রী নন্দীগ্রাম যেতে পারছেন না, সে বিষয়ে অবশ্য কিছু জানাননি অখিল। তৃণমূল সূত্রেও এখনও পর্যন্ত মমতার নন্দীগ্রামে অনুপস্থিতি নিয়ে কিছু জানানো হয়নি। তবে প্রত্যাশিত ভাবেই এ নিয়ে নানা জল্পনা চলছে।
প্রসঙ্গত, সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতার প্রশাসনিক সভা রয়েছে বোলপুরে। মঙ্গলবার রোড-শো। তার পর মুখ্যমন্ত্রীর যাওয়ার কথা ছিল উত্তরবঙ্গে। উত্তরবঙ্গ সফর সেরেই ৭ জানুয়ারি নন্দীগ্রামের তেখালিতে সভা করতে যাওয়ার কথা ছিল মমতার। কিন্তু সোমবার অখিল জানিয়েছেন, মমতা সেখানে যাবেন না। সোমবার সকালে দলের শীর্ষনেতৃত্বের তরফেই অখিলকে জানিয়ে দেওয়া হয়, আগামী ৭ জানুয়ারি মমতা নন্দীগ্রামে যাচ্ছেন না। তবে রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি ওই সভায় উপস্থিত থাকবেন। থাকবেন অন্যান্য নেতারাও। যদিও মমতার অনুপস্থিতিতে সভার ‘রাজনৈতিক গুরুত্ব’ অনেকটাই হ্রাস পেল বলে তৃণমূলের অন্দরে বিভিন্ন নেতা মনে করছেন। বস্তুত, তাঁরা অন্যায্য কিছুও মনে করছেন না।
আরও পড়ুন: শুভেন্দুর বার্তা রাজীব, সাধনকে
আরও পড়ুন: বঙ্গভোটে চাকরির ‘টোপ’ তুলে নিল বিজেপি
নন্দীগ্রামে মমতার সভার অন্য ‘তাৎপর্য’ও ছিল। কারণ, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যাওয়া শুভেন্দু অধিকারী মুখ্যমন্ত্রীর সভার পরদিন, ৮ তারিখে নন্দীগ্রামেই সভার ডাক দিয়ে রেখেছেন। তিনি বলেছেন, ৭ তারিখ মমতা নন্দীগ্রামে গিয়ে তাঁ নামে যা যা অভিযোগ করবেন, পরদিন তিনি তার জবাব দেবেন। প্রসঙ্গত, শুভেন্দু নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়কও বটে। বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার আগে তিনি বিধায়কপদ থেকে ইস্তফা দেন। তাই নন্দীগ্রাম আপাতত বিধায়কহীন। এখন দেখার, ‘পরিবর্তিত পরিস্থিতি’তে শুভেন্দু ৭ তারিখেই নন্দীগ্রামে সভা করেন কি না। তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রের অবশ্য খবর, শুভেন্দু ৮ তারিখেই সভা করবেন। তাঁর এক অনুগামীর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী না এলেও তৃণমূলের সভা তো ৭ তারিখে হবে। সেখান থেকে যা যা প্রশ্ন করা হবে, ৮ তারিখে তার জবাব দেবেন দাদা।’’
দীর্ঘদিন আগে থেকেই মমতার নন্দীগ্রামের দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। মমতা না যাওয়ার পরিস্থিতিতে ৭ জানুয়ারির সভা নিয়ে মঙ্গলবার বৈঠকে বসতে চলেছে তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটি। ওই বৈঠকে স্থির হবে দলীয় কৌশল। মমতা ওইদিন নন্দীগ্রামে না যাওয়ায় স্বভাবতই রাজনৈতিক আক্রমণ শুরু করেছে বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘‘ভয়ে সভা বাতিল করেছেন মুখ্যমন্ত্রী!’’