Manikchak

নিয়ম ভেঙে ১ কোটি ৫ লক্ষের দরপত্র! তৃণমূলের অভিযোগ মিথ্যা, দাবি বিজেপি পঞ্চায়েত প্রধানের

নিয়ম অনুযায়ী, টেন্ডার ডাকার আগে পঞ্চায়েতের বৈঠকে তা নিয়ে আলোচনা করতে হয়। তবে এ ক্ষেত্রে কোনও বৈঠকই ডাকা হয়নি বলে অভিযোগ তৃণমূলের।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

মানিকচক শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২৩ ১৮:৫৭
Share:

তৃণমূলের সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন বিজেপি পঞ্চায়েত প্রধান বিউটি রজক। —নিজস্ব চিত্র।

রাস্তা, কালভার্ট-সহ এলাকার উন্নয়নের কাজে নিয়ম ভেঙে রাতারাতি প্রায় ১ কোটি ৫ লক্ষ টাকার টেন্ডার (দরপত্র) আহ্বান করেছেন বিজেপির পঞ্চায়েত প্রধান। যদিও এই প্রক্রিয়ায় জড়িত পঞ্চায়েতের সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে নিয়মমাফিক বৈঠক করা হয়নি। বরং এ সম্পর্কে নোটিসের মাধ্যমে খবর পেয়েছেন পঞ্চায়েত সদস্যরা। মালদহের মানিকচক গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান বিউটি রজকের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার এই অভিযোগে সরব হয়েছে জেলা তৃণমূল। তবে বিজেপির পাল্টা দাবি, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এলাকায় উন্নয়ন ব্যাহত করতে মিথ্যা অভিযোগ করছে রাজ্যের শাসকদল।

Advertisement

পঞ্চায়েত দফতর সূত্রে খবর, ১৯ আসনবিশিষ্ট ওই পঞ্চায়েত সমিতিতে বিজেপির সদস্যসংখ্যা ১০। তৃণমূলের সদস্য ৯ জন। অভিযোগ মানিকচক এলাকার রাস্তা, কালভার্ট-সহ বৈদ্যুতিক বাতি লাগানোর কাজের টেন্ডার আহ্বান করার প্রক্রিয়ায় নিয়মভঙ্গ করা হয়েছে। মঙ্গলবার মানিকচকের বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ করে টেন্ডার বাতিলে দাবি জানিয়েছেন ৮ সদস্য। যদিও সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন প্রধান বিউটি রজক।

নিয়ম অনুযায়ী, টেন্ডার ডাকার আগে বৈঠকে তা নিয়ে আলোচনা করতে হয়। তাতে যে পঞ্চায়েত দফতরের অধীনস্থ কাজের জন্য টেন্ডার ডাকার প্রয়োজন তার কর্মাধ্যক্ষ-সহ পঞ্চায়েত প্রধান, বিরোধী দলনেতা ছাড়াও পঞ্চায়েতের বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের উপস্থিতি প্রয়োজন। তবে এ ক্ষেত্রে কোনও বৈঠকই ডাকা হয়নি বলে অভিযোগ।

Advertisement

সোমবার এই টেন্ডারের নিলাম প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে শনিবার চিঠি মারফত জেনেছেন পঞ্চায়েত সদস্যা ফুলবতী চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতে যে এত টাকার টেন্ডার ডাকা হচ্ছে, সে ব্যাপারে আমাদের কিছু জানা নেই। চিঠির মাধ্যমে টেন্ডারের নিলাম শুরুর নোটিস পেয়েছি। আমাদের একেবারে অন্ধকারে রেখে মোটা টাকার বিনিময়ে নিজেদের ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দিতে এমনটা করছেন প্রধান। আমরা সমস্ত ঘটনার বিবরণ জানিয়ে মানিকচকের বিডিও-র কাছে অভিযোগ দায়ের করেছি। অবিলম্বে এই টেন্ডার বাতিল করে নতুন করে টেন্ডার করার জন্য আবেদন জানাচ্ছি।’’ এতে দুর্নীতির গন্ধ পাচ্ছেন তৃণমূল নেতা সানোয়ার আলি পারভেজ। তাঁর দাবি, ‘‘মোটা অঙ্কের টাকার কমিশনের বিনিময়ে নিজেদের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দিতে সকলকে অন্ধকারে রেখে গোপনে টেন্ডার ডেকেছেন বিজেপির প্রধান। শনিবার স্পিড পোস্টের মাধ্যমে এক জন পঞ্চায়েত সঞ্চালক টেন্ডার বিট ওপেনের নোটিস পান। এর পরই বিষয়টি জানাজানি হয়।’’ যদিও সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন মানিকচক পঞ্চায়েত প্রধান বিউটি রজক। তাঁর দাবি, ‘‘টেন্ডার ডাকা হয়েছে যাবতীয় নিয়ম মেনেই। তবে ১ কোটি ৫ লক্ষ নয়, ৬৬ লক্ষ টাকার টেন্ডারের ডাকা হয়েছে। আসলে পঞ্চায়েত ভোটের আগে এলাকায় উন্নয়ন ব্যাহত করতে মিথ্যা অভিযোগ করছে তৃণমূল।’’

শাসকদলের বিধায়কের দিকে পাল্টা অভিযোগ করেছেন বিজেপির দক্ষিণ মালদহ জেলার সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক গৌড়চন্দ্র মণ্ডল। তাঁর দাবি, ‘‘এই ব্লকে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র এবং তাঁর জামাই তথা তৃণমূলের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও এলাকার ঠিকাদার সৌম্যদীপ সরকারের অঙ্গুলিহেলনে পঞ্চায়েতের কাজ চলে। ফলে এই টেন্ডার প্রক্রিয়াতে তাঁদেরই ষড়যন্ত্র রয়েছে। সকলেই জানেন, ট্রন্ডারের বরাত পেতে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ টাকা কাটমানি দিতে হয়। এই প্রক্রিয়া পরিচালনা করেন এলাকার বিধায়ক-সহ শাসকদলের বড় নেতারা। বিজেপির প্রধানের পক্ষে এ কাজ সম্ভব নয়। তৃণমূলের পঞ্চায়েতের সদস্যরা বড় নেতাদের কাছ থেকে ভাগ না পেয়েই এমন অভিযোগ তুলেছেন।’’

এ বিষয়ে ক্যামেরার সামনে মন্তব্য না করলেও মানিকচকের বিডিও শ্যামল মণ্ডল জানিয়েছেন, অভিযোগের তদন্ত করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement