রবিবার ঘুমপাড়ানি গুলি খাওয়ার পর জ়িনতকে খাঁচাবন্দি করে বন দফতর। —ফাইল চিত্র।
গত ন’দিন ধরে বনকর্মীদের সঙ্গে লুকোচুরি খেলেছে জ়িনত। তিন জেলা দাপিয়ে বেরিয়েছে। তাকে ধরতে কার্যত নাকানিচোবানি খেতে হয় বনকর্মীদের। অবশেষে রবিবার দুপুর ৩টে ৫৮ মিনিট নাগাদ বাঁকুড়ার গোঁসাইডিহির জঙ্গলে ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু হয় ওড়িশার বাঘিনি। তার পর তাকে খাঁচাবন্দি করেন বনকর্মীরা। তার পর প্রাথমিক স্বাস্থ্যপরীক্ষার পর রাতেই জ়িনতকে বাঁকুড়া থেকে কলকাতার আলিপুরের পশু হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন চিকিৎসকেরা। তার পর তাকে আবার পাঠিয়ে দেওয়া হবে ওড়িশাতে।
মহারাষ্ট্রের তাডোবা-আন্ধারি ব্যাঘ্র সংরক্ষণে জন্ম জ়িনতের। তার পর সেখান থেকেই তাকে পাঠানো হয় ওড়িশার সিমলিপালে। সেখানকারই বাসিন্দা সে। কিন্তু দিন কয়েক আগে ঝাড়খণ্ডের কুলিয়া রেঞ্জের রাজাবাসার জঙ্গল পেরিয়ে চিয়াবান্ধি এলাকা হয়ে ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি থানার কাটচুয়া জঙ্গলে প্রবেশ করেছিল বাঘিনি। তার পর দু’দিন ধরে কখনও ময়ূরঝর্ণার জঙ্গলে, আবার কখনও কাকড়াঝোরের জঙ্গলে নিজের ঠিকানা বদল করছিল সে। পরে তেলিঘানার জঙ্গল হয়ে জ়িনত প্রবেশ করে পুরুলিয়া জেলার বান্দোয়ান থানা এলাকার রাইকা পাহাড়ে।
রাইকা পাহাড় ও পার্শ্ববর্তী ভাঁড়ারি পাহাড়ে দিন চারেক কাটিয়ে মানবাজারের ডাঙ্গরডিহির জঙ্গলে হাজির হয় সে। সেখান থেকেই শুক্রবার ভোরের দিকে জ়িনত কুমারী নদী পেরিয়ে ঢুকে পড়ে বাঁকুড়ার রানিবাঁধ ব্লকের গোঁসাইডিহির জঙ্গলে। রবিবার সেই জঙ্গল থেকেই ধরা হয় জ়িনতকে। বাঘিনিকে ওড়িশার সিমলিপাল থেকে আনা বিশেষ খাঁচায় বন্দি করে ফেলে বন দফতর। বিষ্ণুপুর বন বিভাগের দফতরে নিয়ে গিয়ে বাঘিনির একদফা শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়।
বিষ্ণুপুর থেকে এ বার জ়িনতকে নিয়ে আসা হয়েছে আলিপুরে। আপাতত আলিপুর চিড়িয়াখানার বিপরীতে পশু হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে থাকবে বাঘিনি। তার পর তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে সিমলিপালে। এ ব্যাপারে ইতিমধ্যেই ওড়িশা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। চিঠি পাঠানো হয়েছে বাংলার পড়শি রাজ্যকে।
জ়িনত প্রসঙ্গে রাজ্যের বনমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা বলেন, ‘‘যে হেতু কয়েক দিন ধরে ঘোরাঘুরি করেছে, তাই ওর শারীরিক অবস্থা দেখতে হবে। রাখতে হবে পর্যবেক্ষণে। ওড়িশার কাছে বাঘিনিকে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ওড়িশার সরকারকে এ ব্যাপারে চিঠি পাঠানো হয়েছে ইতিমধ্যেই।’’