last rites

Superstition: মা নিখোঁজ ১৫ বছর, সালিশি সভার পরামর্শে মায়ের পুতুল তৈরি করে সৎকার ছেলেদের

শিলিগুড়ির ফাঁসিদেওয়া এলাকার এই ঘটনাকে ‘পাগলামি’ বলে আখ্যা দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২২ ১৭:১০
Share:

মায়ের নামে এই পুতুল গড়েছেন ফাঁসিদেওয়ার সাবিত্রী চৌধুরীর তিন ছেলে। —নিজস্ব চিত্র।

প্রায় ১৫ বছর আগে নিখোঁজ বৃদ্ধা মা জীবিত না মৃত, তা জানা নেই। তা সত্ত্বেও সালিশি সভার পরামর্শে মায়ের অন্ত্যেষ্টি সারলেন তিন ছেলে। মায়ের নামে একটি পুতুল গড়ে শ্মশানঘাটে নিয়ে গিয়ে রবিবার যাবতীয় রীতি মেনে সৎকার করেন তাঁরা। শিলিগুড়ির ফাঁসিদেওয়া এলাকার এই ঘটনাকে ‘পাগলামি’ বলে আখ্যা দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যদের একাংশ।

ফাঁসিদেওয়ার রাঙাপানি স্টেশনপাড়ায় স্বামী ও তিন সন্তান নিয়ে থাকতেন সাবিত্রী চৌধুরী। পরিবার সূত্রে খবর, প্রায় ২৭ বছর আগে সাবিত্রীর স্বামী জয়লাল চৌধুরী মারা যান। ছেলেদের দাবি, ‘‘সে সময় থেকেই মানসিক ভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন মা। এর পর মাঝেমধ্যেই বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যেতেন। তবে কিছু দিন পরে ফিরেও আসতেন।’’ তবে প্রায় দেড় দশক আগে নিখোঁজ হওয়ার পর আর বা়ড়ি ফেরেননি সাবিত্রী। সে সময় তাঁর বয়স ছিল প্রায় ৭০।

Advertisement

সাবিত্রীর বড় ছেলে রঘুনাথ চৌধুরী জানিয়েছেন, এত বছর ধরে বৃদ্ধা মা বাড়ি না ফেরায় তাঁদের কী করণীয়, সে নিয়ে গ্রামের লোকজনের পরামর্শ চেয়েছিলেন তাঁরা। এ নিয়ে সালিশি সভাও বসে। সে সভার নির্দেশ, মায়ের একটি পুতুল গড়ে তাঁর সৎকার করতে হবে। রঘুনাথ বলেন, ‘‘মায়ের আত্মার শান্তি কামনাতেই এ আয়োজন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘১৫ বছর ধরে মা নিখোঁজ। বেঁচে রয়েছেন না মৃত, তা জানি না। গ্রামের বড়দের সঙ্গে আলোচনার পর সৎকার করেছি। মায়ের পুতুল বানিয়ে হিন্দু মতে রীতিনীতি মেনে সে কাজ হয়েছে।’’

এ ঘটনায় হতবাক বিজ্ঞানমঞ্চের রাজ্য কমিটির সদস্য শঙ্কর কর। তিনি বলেন, ‘‘কোনও ব্যক্তি নিরুদ্দেশ থাকার ১২ বছরের বেশি সময় পেরোলে তাঁকে মৃত ঘোষণার জন্য আইনি প্রক্রিয়া রয়েছে। ওই বৃদ্ধার ছেলেরা সেগুলি করেছেন কি? আমার মতে, এগুলো পাগলামি ছাড়া আর কিছুই নয়। তাতে গ্রামবাসীরাও রয়েছেন। এ ঘটনায় সাধারণ মানুষ অবাক হবেন। পরিবারের কাছে এটি মানসিক সান্ত্বনা ছাড়া আর কিছুই নয়।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement