তথ্যচিত্র ‘কালী’-র পোস্টারের পক্ষে মহুয়া মৈত্রের মন্তব্যে সমর্থন নেই দলের।
কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রের মন্তব্যে দলের যে সমর্থন নেই, তা মঙ্গলবার স্পষ্ট করে দিয়েছিল তৃণমূল। তথ্যচিত্র ‘কালী’-র পোস্টারের পক্ষে যে তাঁদের সমর্থন নেই, তাও এ বার বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দিলেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। বুধবার এক বিবৃতিতে তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘‘আমরা আগেই জানিয়েছিলাম মহুয়া মৈত্রের বক্তব্যের সঙ্গে দল একমত নয়। এখন আমরা বলছি ‘কালী’ তথ্যচিত্রের পোস্টারে যে ছবির ব্যবহার করা হয়েছে তাও আমরা সমর্থন করি না। ওই পোস্টারে যে ভাবে এলজিবিটি-দের পতাকার ছবি দেওয়া হয়েছে, তাও আমরা সমর্থন করি না।’’ কেন বাংলার শাসকদল এমন অবস্থান নিয়েছে, তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন দমদমের সাংসদ। তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে কোন ধর্মীয় বিতর্কের মধ্যে যেতে চাই না। আমরা সকল ধর্মকে সমান মর্যাদা ও সম্মান দিতে চাই। ধর্মের ঊর্ধ্বে উঠে মানুষজন তাদের সবরকম অধিকার পাক, বরং সেইসব বিষয়ে আলোচনা হোক।’’
তথ্যচিত্রটির পোস্টার সামনে আসার পরই বিতর্ক শুরু হয়। ভারতীয় পরিচালক লীনা মানিমেকালাইয়ের তথ্যচিত্রের একটি পোস্টারে দেবী কালী রূপে সজ্জিত এক মহিলাকে ধূমপান করতে দেখা গিয়েছে। একাধিক হিন্দু সংগঠনের তরফে এই পোস্টারের বিরোধিতা করা হয়। তাদের অভিযোগ, তথ্যচিত্রের পরিচালক লীনা মণিমেকলেইয়ে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করেছেন। যা অপরাধ। ওই প্রযোজকের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার দাবিও জানিয়েছে একাধিক সংগঠন। পোস্টারটির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে দেশ জুড়ে। সেই পোস্টারে এলজিবিটি সম্প্রদায়ের একটি পতাকাও দেখা যায়। তা নিয়েও আপত্তি উঠেছে। নিজের বক্তব্যে এই সব ক’টি বিষয়ের উল্লেখ করেছেন সৌগত।
পোস্টার নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্ক প্রসঙ্গে সোমবার কলকাতার এক অনুষ্ঠানে তৃণমূল সাংসদ মহুয়াকে প্রশ্ন করা হলে একটি মন্তব্য করেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ। তাঁর সেই মন্তব্য নিয়েও দানা বাঁধে নতুন বিতর্ক। এক দিকে মহুয়ার মন্তব্য নিয়ে আক্রমণ শানাতে শুরু করে বিজেপি। জবাবে সর্বভারতীয় তৃণমূলের তরফেও টুইট করে জানিয়ে দেওয়া হয়, তারা মহুয়ার বক্তব্যকে সমর্থন করছে না। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও বুধবার বলেন, “মহুয়ার মন্তব্যে যে সায় নেই দল তা জানিয়েছে। কিন্তু দলের সাংসদ হিসেবে তাঁর আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত ছিল। আমরা আশা করব সাংসদ যেন দলের নির্দেশ মেনে চলেন।”