(বাঁ দিকে) রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহ এবং রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।
তবে বরফ কি গলল! রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের বৈঠকের পরে এই জল্পনাই দানা বেঁধেছে প্রশাসনের অন্দরে।
ডাকার পরেও রাজভবনে না যাওয়ায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিন্হার ‘জয়েনিং রিপোর্ট’ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। নজিরবিহীন সেই পদক্ষেপে বিতর্কের সঙ্গে রাজীবের ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। কিন্তু গত রবিবার রাজভবনে রাজ্যপাল এবং কমিশনারের দীর্ঘ প্রায় দু’ঘণ্টার বৈঠকের পর প্রশাসনের শীর্ষ মহলের আশা, ‘জয়েনিং রিপোর্ট’ বিতর্কটি হয়তো আর দীর্ঘায়িত হবে না।
তবে ফেরত যাওয়া রাজীবের ‘জয়েনিং রিপোর্ট’-এর এখন ঠিক কী অবস্থায় রয়েছে, তা নিয়ে কমিশন, রাজভবন বা নবান্নের থেকে সুনির্দিষ্ট কোনও বার্তা পাওয়া যায়নি। তা ঠান্ডা ঘরে চলে গেল কি না, তা নিয়েও জল্পনা চলছে।
ভোট-অশান্তির অভিযোগ-সহ একাধিক বিষয়ে কথা বলতে চেয়ে আগে রাজীবকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপাল বোস। ব্যস্ত থাকার কারণ দেখিয়ে সে দিন রাজভবনে যাননি রাজীব। সেই ঘটনার পরে রাজীবের ‘জয়েনিং রিপোর্ট’ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন রাজ্যপাল বোস। গত রবিবার রাজীব নিজে রাজ্যপালের সময় চেয়ে রাজভবনে গিয়েছিলেন। বৈঠক করেছিলেন দীর্ঘ প্রায় দু’ঘণ্টা। বৈঠক নিয়ে রাজভবন বা কমিশনের তরফে স্পষ্ট বার্তা না মিললেও, সোমবার যথারীতি দফতরে গিয়ে কাজ করেছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার। উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছেন রাজ্যপাল।
প্রসঙ্গত, ওই বৈঠকের আগেই রাজ্যপাল অন্য একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে বলেছিলেন, “আমি তাঁকে ডাকিনি। কমিশনের থেকেই সময় চাওয়া হয়েছিল। অনেকগুলি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা প্রয়োজন। উনি (রাজীব) ব্যস্ত রয়েছেন। আজ, কাল বা অন্য সময়ে তিনি আসতেই পারেন।” রাজ্যপালের ওই মন্তব্য শুনে প্রাক্তন, প্রবীণ আধিকারিকদের একাংশের অনুমান, ভোটের আগে জয়েনিং রিপোর্ট সংক্রান্ত বিষয়টি হয়তো তিনি আর দীর্ঘায়িত করতে চাইবেন না। সেই কারণে কমিশনারকে তাঁর করণীয় স্মরণ করিয়ে দিতে সময় দিয়েছিলেন রাজ্যপাল বোস।
তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উপর তাঁর যে কড়া নজর থাকবে, উত্তরবঙ্গে গিয়ে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল। সেখানে তিনি বলেন, “যেখানে হিংসার ঘটনা ঘটবে সেখানে যাব। অনেক জায়গায় অশান্তির ঘটনা ঘটছে। অশান্তির প্রকৃতি নিজে খতিয়ে দেখতে চাই। সরাসরি প্রভাবিত মানুষ এবং আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে চাই পরিস্থিতি।” প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে মনে করছেন, কমিশন বা রাজ্য প্রশাসনের পাঠানো রিপোর্টের উপরেই শুধু আর নির্ভর করতে চাইছে না রাজভবন।