রাজভবনে আটকে নেই কোনও বিল, স্পিকারের অভিযোগের জবাব দিল রাজভবন। ফাইল চিত্র।
গত সাড়ে ১২ বছরে ২২টি বিল আটকে রয়েছে রাজভবনে। মঙ্গলবার এমনটাই দাবি করছিলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবারই রাজভবন থেকে সেই অভিযোগের ‘জবাব’ দেওয়া হল। রাজভবন থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল যে, ১২ বছরে ২২টি বিল আটকে রয়েছে রাজভবনে। অভিযোগটি খতিয়ে দেখতে বুধবারই রাজভবনে একটি বৈঠক ডেকেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেই বৈঠকে যাবতীয় বিষয় খতিয়ে দেখার পর বিবৃতি দিয়ে রাজভবন জানায়, কোনও বিল রাজভবনের জন্য আটকে নেই।
২০১১-২৩ সাল পর্যন্ত যে ২২টি বিল আটকে থাকার কথা স্পিকার জানিয়েছিলেন, সেই বিলগুলি কোন পর্যায়ে রয়েছে, তার ফিরিস্তিও বিবৃতিতে তুলে ধরেছে রাজভবন। ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রোটেকশন অফ ইন্টারেস্ট অফ ডিপোজ়িটার্স ইন ফিন্যান্সিয়াল এস্টাবলিশমেন্টস বিল ২০১৩’ শর্তসাপেক্ষে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পাওয়ার পর তা ২২ এপ্রিল ২০১৫ সালে রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি, জেসপ ও ডানলপ অধিগ্রহণ নিয়ে বিধানসভায় পাশ হওয়া দু’টি বিল ২০১৬ সাল থেকে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদে রাজ্যপালকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বসানোর জন্য বেশ কয়েকটি বিল পাশ করা হয়েছিল ২০২২ সালে। সেই সব ক’টি বিলকেই বিচারাধীন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এমন বিলের সংখ্যা সাত। ১২টি বিল প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। বিবৃতির শেষাংশে জানানো হয়েছে, বিল দ্রুত ছাড়তে একটি নীতি চালু করেছেন রাজ্যপাল। যেখানে তিনি মন্ত্রী ও সচিবদের সঙ্গে আলোচনার অব্যবহিত পরেই তাঁর সিদ্ধান্ত জানাবেন। বাংলার রাজনীতির কারবারিদের একাংশের কথায়, এমন কথা বলে তিনি বিল পাশ করার ক্ষেত্রে যাবতীয় দায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দিকেই ঠেলে দিয়েছেন।
সোমবার পঞ্জাব, তামিলনাড়ু, কেরল, তেলঙ্গানা, পশ্চিমবঙ্গের মতো বিরোধী-শাসিত রাজ্যগুলিতে মূল বিলগুলি আটকে রাখার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। এ বিষয়ে স্পিকার বিমান বলেছিলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত আমাদের ২২টি বিল রাজভবনে আটকে রয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘মাননীয় রাজ্যপাল অনেক নিয়োগ করছেন বলে শুনেছি। ওঁর একটা ড্রাফ্ট সেকশন তৈরি করা উচিত, যাঁরা ড্রাফ্টিং দেখবেন।’’ সেই অভিযোগের ‘জবাবে’ই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে রাজভবন।