(বাঁ দিকে) সিভি আনন্দ বোস। বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
সাড়ে ১২ বছরে ২২ বিল আটকে রয়েছে রাজভবনে। এমনটাই দাবি করলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার রাজভবনে বিল আটকে থাকা নিয়ে এক পরিসংখ্যান দিয়ে এমনটাই দাবি করেছেন তিনি। সোমবার পঞ্জাব, তামিলনাড়ু, কেরল, তেলঙ্গানা, পশ্চিমবঙ্গের মতো বিরোধী-শাসিত রাজ্যগুলিতে মূল বিলগুলি আটকে রাখার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। এ বিষয়ে স্পিকার বিমান বলেন, ‘‘২০১১ সাল থেকে ২০২৩ সালের এখনও পর্যন্ত মোট আমাদের ২২টি বিল রাজভবনে আটকে রয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘মাননীয় রাজ্যপাল অনেক নিয়োগ করছেন বলে শুনেছি। ওঁর একটা ড্রাফ্ট সেকশন তৈরি করা উচিত, যাঁরা ড্রাফ্টিং দেখবেন। যাঁরা দেখতে পারেন আমাদের বিলগুলির ক্ষেত্রে কী ত্রুটি বিচ্যুতি রয়েছে। লোকসভাতে এই ধরনের বিষয় রয়েছে, আমাদের বিধানসভাতেও কর্মীদের নিয়ে এই ধরনের একটি কমিটি রয়েছে। তাঁরা বিলগুলি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেন। সেই বিলগুলি তাঁরা পর্যালোচনা করে খুঁটিয়ে দেখেন যে কোনও ভুল ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে কি না। যদি কোনও ভুল থাকে সেগুলি সংশোধন করা হয়। সঙ্গে সঙ্গেই নোটিসে আনা হয়।’’
এমন মন্তব্য করে রাজ্যপাল কি বোঝাতে চাইলেন যে কোনও রকম ভুলত্রুটির অবকাশ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় নেই? স্পিকার বিমানের কথায়, ‘‘যদি কোনও ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকেই থাকে সে ক্ষেত্রে রাজ্যের অ্যাডভোকট জেনারেল (এজি)-র পরামর্শ নিতে পারেন। রাজ্যপালের এ দিকে একটু নজর দেওয়া উচিত। তিনি রাজভবনের খেলা দেখার বন্দোবস্ত করেছেন সাধারণ মানুষের জন্য। রাজভবনের দরজা খুলে দিয়েছেন। এমনকি সাধারণ মানুষের অভিযোগ জানানোর বন্দোবস্ত করেছেন। কিন্তু জনগণের আওয়াজ যেখানে প্রতিফলিত হয় বিধানসভায়, জনগণের সেই আওয়াজ যেন রাজভবনের কানে যায়।’’ প্রসঙ্গত, ১৫তম বিধানসভায় ২০১১-১৬ পর্যন্ত রাজভবনে আটকে রয়েছে তিনটি বিল। ১৬তম বিধানসভায় ২০১৬-২০২১ পর্যন্ত চারটি বিল আটকে রয়েছে। আর ২০২১-২৩ সালের মাত্র আড়াই বছরে ১৫টি বিল আটকে রয়েছে।
বিধানসভায় পাশ হওয়া গণপিটুনি বিল, হাওড়া পুরসভা সংক্রান্ত দুটি বিল, বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত একঝাঁক বিল আটকে রয়েছে রাজভবনে। এই সাড়ে ১২ বছরে এম কে নারায়ণ, কেশরীনাথ ত্রিপাঠী, জগদীপ ধনখড়, লা গণেশন ও বর্তমান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের আমলে এই একঝাঁক বিল রাজভবনের আটকে থাকাকেই প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছেন স্পিকার বিমান।