শ্রীরামপুর-নিউ টাউন ২৮৫ নম্বর রুটের বাস। ছবি: সংগৃহীত।
বাউন্সার দিয়ে যাত্রীবোঝাই বাস খালি করিয়ে তা তুলে নিয়ে গিয়েছে ঋণ প্রদানকারী সংস্থা। ঋণ শোধ না করায় শ্রীরামপুর-নিউ টাউন ২৮৫ নম্বর রুটের তিনটি বাস বুধবার তুলে নিয়ে যায় ঋণ প্রদানকারী সংস্থা। এই ঘটনা জানার পরেই ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। মন্ত্রীর সঙ্গে দফতরের শীর্ষকর্তারাও বেজায় ক্ষুব্ধ বলেই পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর।
বালি ব্রিজ থেকে নিউ টাউন-শ্রীরামপুরগামী একটি বাস আটক করে ঋণপ্রদানকারী সংস্থার লোকজন। বাসচালক ও কন্ডাকটার-সহ বাসে থাকা যাত্রীদের নামিয়ে বলপূর্বক বাসটি নিয়ে চলে যায় ঋণপ্রদানকারী সংস্থার বাউন্সাররা। অভিযোগ, এর পর ওই রুটের আরও দু’টি বাস একই কায়দায় তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। উত্তরপাড়া ও বালি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। ঘটনাচক্রে হুগলি জেলার শ্রীরামপুর মহকুমা এলাকার বাসিন্দা পরিবহণমন্ত্রী। এমন ঘটনায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন তিনি। স্নেহাশিস বলেন, ‘‘বাউন্সার দিয়ে যাত্রীদের গাড়ি থেকে নামিয়ে ঋণপ্রদানকারী সংস্থা বেসরকারি বাস তুলে নিয়ে যাবে, এমন ঘটনা সমর্থনযোগ্য নয়। কেউ ঋণখেলাপ করলে তার জন্য আইন-আদালত রয়েছে। সংস্থাগুলি আইনি পথ অবলম্বন করতেই পারে। তা ছাড়া ঋণ আদায়ের নামে যে ভাবে দাদাগিরি করা হচ্ছে, তা আমাদের মতো দেশে কাম্য নয়।’’ এই ঘটনার উপর তিনি যে নজর রাখছেন, তা-ও বুঝিয়ে দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে নিজেদের ক্ষোভ গোপন করেনি বাস ও মিনিবাস সমন্বয় সমিতি। তাদের তরফে রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ঋণ নিলে, ঋণ পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু কেন ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না, তা-ও দেখতে হবে। কতটা ঋণ নিয়েছি, কতটা শোধ করেছে সংস্থাগুলির সে দিকেও নজর রাখা উচিত। কিন্তু আইন-আদালতের তোয়াক্কা না করে গুন্ডাগর্দি করে এ সব করা হচ্ছে। যদি সমস্যা থেকেই থাকে, তা হলে কোর্টে যেতে হবে। আমরা এ হেন ঝামেলা চাই না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ঋণ নেওয়ার সময় কয়েকশো পাতায় সই করানো হয়। কোথায় কী লেখা থাকে তা সব পড়ে দেখা সেই সময় সম্ভব হয় না। সেই সবের সুযোগ নিয়েই গাজোয়ারি করা হচ্ছে। আদালত কিন্তু বলপূর্বক গাড়ি নিয়ে যাওয়ার বিপক্ষে মত দিয়েছে।’’
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে শ্রীরামপুর-নিউ টাউন ২৮৫ নম্বর রুট চালু হয়। বর্তমানে এই রুটে ১৪টি বাস চলে। বাসগুলির মধ্যে কিছু বাস ঋণদানকারী সংস্থার থেকে ঋণ নিয়ে কেনা হয়েছিল। তাদের মধ্যে কয়েক জন সময়ে ঋণের কিস্তি দিতে পারেননি বলেই অভিযোগ উঠেছে। ঋণপ্রদানকারী সংস্থাটি ঋণ আদায়ের জন্য বেশ কয়েক বার তাগাদা দিয়েছে। কয়েক জন মালিক বাড়তি সময় চেয়ে আদালতেও গিয়েছেন। কিন্তু তার মধ্যেই এই ঘটনা ঘটে যাওয়ায় সংস্থার উপর বিরক্ত পরিবহণ দফতর। বৃহস্পতিবার উত্তরপাড়া থানা একটি বাস উদ্ধার করেছে বলে বাসমালিক সংগঠন সূত্রে খবর।