Anubrata Mondal

বীরভূমে কেষ্ট, কোর কমিটিও

সূত্রের খবর, কমিটি ভাঙবে না। কারণ, কোর কমিটি অনুব্রতের অনুপস্থিতিতে যে কাজ করেছে এই দু’বছরে, তাকে অস্বীকার করা যায় না। দলের বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যাচ্ছে, জেলা সভাপতি হিসেবে অনুব্রতকে এই ব্যবস্থার সঙ্গে মিলেমিশেই কাজ করতে হবে।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত  , বাসুদেব ঘোষ 

সিউড়ি ও বোলপুর শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:৩৫
Share:

বোলপুর তৃণমূল কার্যালয়ে ঢোকার মুখে দেওয়াল জুড়ে লাগছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়,অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে দেওয়া অনুব্রত মণ্ডলের ছবি।বুধবার। ছবিঃ বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

বীরভূমের সংগঠন নিয়ে ভারসাম্যের পথেই হাঁটতে চাইছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। অন্তত দল সূত্রের খবর এমনটাই।

Advertisement

জেলায় সংগঠন কার হাতে থাকবে, অনুব্রত, না কি তাঁর অনুপস্থিতিতে গড়া কোর কমিটির— অনুব্রত মণ্ডল বীরভূমে ফেরা ইস্তক এই প্রশ্নই ঘুরছিল জেলা তৃণমূলের অন্দরে। মঙ্গলবার বাড়ি পৌঁছনোর ২৪ ঘণ্টা পরেই বোলপুরে দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে নেতা-কর্মীদের একাংশের সঙ্গে অনুব্রতের বৈঠক করা এবং রাতারাতি কার্যালয় থেকে কোর কমিটির সদস্যদের ছবি সরিয়ে অনুব্রতের ছবি ফিরিয়ে আনার পরে কর্মীরা ভাবতে শুরু করেন, তবে কি কোর কমিটি ভেঙে দেওয়া হবে? যদিও তৃণমূল সূত্রের খবর, কোর কমিটি যেমন আছে, তেমনই থাকবে। জেলায় আপাতত ভারসাম্যের রাজনীতির পথেই হাঁটতে চান শীর্ষ নেতৃত্ব।

সূত্রের খবর, কমিটি ভাঙবে না। কারণ, কোর কমিটি অনুব্রতের অনুপস্থিতিতে যে কাজ করেছে এই দু’বছরে, তাকে অস্বীকার করা যায় না। দলের বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যাচ্ছে, জেলা সভাপতি হিসেবে অনুব্রতকে এই ব্যবস্থার সঙ্গে মিলেমিশেই কাজ করতে হবে। এখনই আলাদা করে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে না।

Advertisement

মঙ্গলবার নিচুপট্টির বাড়িতে ফেরার পরে জেলা তৃণমূলের একাধিক বড় নেতা-মন্ত্রী-সাংসদ-বিধায়কের সঙ্গে দেখা করেননি অনুব্রত। তাঁর বাড়ির দরজা থেকে ফিরতে হয়েছে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ এবং সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরীকে। তার পরে বুধবার বোলপুরের দলীয় কার্যালয়ে কোর কমিটির সদস্যদের ছবি সরিয়ে সেখানে অনুব্রতের ছবি ফিরে আসতেই চর্চা বাড়ে।

২০২২ সালের অগস্টে গরুপাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পরেই জেলায় কিছুটা বেকায়দায় পড়েছিল তৃণমূলের সংগঠন। ’২৩-এর জানুয়ারিতে জেলা সফরে এসে ৯ সদস্যের কোর কমিটি গড়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কমিটির নেতৃত্বে পঞ্চায়েত নির্বাচন ও লোকসভা ভোটে ভাল ফল করে তৃণমূল। নেতা-কর্মীদের একাংশ ভেবেছিলেন, অনুব্রত ফিরলে সংগঠনে তিনিই শেষ কথা বলবেন। আবার অন্য অংশের বক্তব্য ছিল, কেষ্টর অবর্তমানে দল পরিচালনার কৃতিত্ব এক লহমায় মুছে ফেলা সম্ভব নয় শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষে। দল যেন তাঁদের গুরুত্ব হঠাৎ করে খর্ব না করে, সেটা চাইছেন কোর কমিটির সদস্যদের বড় অংশও।

জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বলছেন, “কোনও বিতর্ক চাইছি না।” তবে কোর কমিটি যে ভাঙা হয়নি, তা-ও স্পষ্ট করেন তিনি।

এ দিন দলীয় কার্যালয়ে অনুব্রতের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কোর কমিটিতে থাকা চন্দ্রনাথ, বিকাশ, অভিজিৎ সিংহরা। তবে, জেলা সভাধিপতি কাজল শেখ এবং দলের চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় অনুপস্থিত ছিলেন। পরে লাভপুরের তৃণমূল নেতা তথা জেলা সহ-সভাপতি আব্দুল মান্নান বলেন, “অনুব্রত কালীপুজোর পরে আবার আগের মতো ব্লকে ব্লকে জনসভা ও মিটিং-মিছিল করবেন বলে জানিয়েছেন।” অনুব্রত নিজে বলেন, “পঁচিশ মাস পরে ফিরেছি। পায়ে ব্যথা আছে, তবে এখন ভাল আছি। সকলকে শারদীয়ার শুভেচ্ছা।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement