—প্রতীকী চিত্র।
সেই প্রথম শ্রেণি থেকে ওকে পড়াচ্ছি। এটাই আমাদের এই কেজি স্কুলে ওর শেষ বছর ছিল। পড়াশোনায় খুবই ভাল ছিল। ওর ক্লাসে পড়ুয়া কম। তবে তাদের মধ্যে ও-ই ফার্স্ট হত। অনেক স্বপ্ন ছিল মেয়েটার। বড় মানুষ হতে চাইত। জানার আগ্রহ ছিল প্রবল। এই পরিণতি মেনে নেওয়া যায় না।
আমাদের এলাকায় এই কেজি স্কুলটাই নামকরা। এলাকার বেশিরভাগ মানুষ সরকারি প্রাথমিক স্কুলেই ছেলেমেয়েদের পড়ান। যাঁদের সামর্থ্য আছে, তাঁরা কেজি স্কুলে ছেলেমেয়েদের ভর্তি করেন। আমি এই স্কুলের সঙ্গে যুক্ত কয়েক বছর ধরে। সকালে স্কুলে পড়াই। বিকেলে স্কুলেরই একটি ঘরে টিউশন করি। জনা ২৫ ছাত্রছাত্রী আসে। ৩টে নাগাদ পড়ানো শুরু করি। ৫টায় শেষ হয়। কয়েক বছর ধরে এ ভাবেই চলছে। ওই মেয়েটিও কয়েক বছর ধরে পড়তে আসছিল। ওর বাবার দোকান রয়েছে স্কুলের কাছেই। তিনিই ওকে দিয়ে যেতেন। নিয়েও যেতেন।
সে দিন (গত শুক্রবার) ৫টার একটু আগেই ওর পড়া শেষ হয়ে গিয়েছিল। ওকে ছুটি দিয়ে দিয়েছিলাম। তবে, ওর এক বন্ধুর তখনও কিছু কাজ বাকি ছিল। ওরা দু’জন একসঙ্গে ফিরবে বলেছিল। তাই ওই মেয়েটি অপেক্ষা করছিল। বন্ধুর ছুটি হলে দু’জনে একসঙ্গে বেরিয়ে যায়। তারপর আমি রোজকার মতোই বাড়ি চলে আসি। পরের দিন সকালে খবর পাই, মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গিয়েছে। শুনেছি, পুলিশ কোনও রকম সহযোগিতা করেনি। এক থানা থেকে আর এক থানায় বাড়ির লোকজনকে ঘোরায়। পুলিশ যদি এ-রকম করে, তা হলে আমরা সাধারণ মানুষ কোথায় যাব বলতে পারেন?
নারী নির্যাতনের ঘটনা তো আমরা প্রায়ই শুনি। মহিলা হিসেবে নিজেও ভয়ে থাকি। নারী নিরাপত্তার দিকে প্রশাসনের উচিত আরও নজর দেওয়া। আর এই ধরনের ঘটনা যারা ঘটিয়েছে, পুলিশ তাদের খুঁজে বার করে ফাঁসি দিক। মেয়েটা তো গেল, দোষীদের কঠোর শাস্তি হলে, তবে কিছুটা শান্তি হবে।