দুর্ঘটনা কমাতেই এই নতুন উদ্যোগ বলে জানাচ্ছে রাজ্য পুলিশ। প্রতীকী ছবি।
দুর্ঘটনা শহর, গ্রাম বা মফস্সল দেখে না। বরং কলকাতার তুলনায় জেলায় জেলায় বড় সড়কে অনেক ক্ষেত্রেই তার দাপট তুলনায় বেশি। এই অবস্থায় কলকাতার ট্র্যাফিক পুলিশ বা যান-পুলিশের মতো রাজ্যের ট্র্যাফিক পুলিশকেও নামানো হয়েছে নৈশ নাকা চেকিংয়ে। শীতের রাতে সেই পুলিশকর্মীরা কুয়াশাচ্ছন্ন রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে চালকদের সঙ্গে কথা বলছেন, ঘুমে চোখ জড়িয়ে আসা চালকদের চা-জল খাইয়ে ঘুম তাড়াচ্ছেন। দুর্ঘটনা কমাতেই এই নতুন উদ্যোগ বলে জানাচ্ছে রাজ্য পুলিশ।
পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের সাম্প্রতিকতম নির্দেশ, রাজ্যের যান-পুলিশকেও শীতের রাতে, ভোরে সিসি ক্যামেরা অধীনে থাকা এলাকায় নাকা চেকিং করতে হবে। নাকায় নিযুক্ত পুলিশ অফিসার-কর্মীদের এক বা দু’জনের দেহে থাকবে ‘বডি ক্যামেরা’। সেই ক্যামেরা তল্লাশির পুরো পর্বটাই রেকর্ড করে রাখবে।
গত মাসে রাজ্য ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে সব জেলায় এই মর্মে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে। মূলত শীতে কালে পথ-নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই এই সুপারিশ করা হয়েছে বলে পুলিশি সূত্রের খবর। এর আগে কলকাতা পুলিশকেও রাতে ক্যামেরার আওতায় নাকা বা তল্লাশি চালাতে বলা হয়েছিল। এ বার সেই ব্যবস্থা বলবৎ হচ্ছে রাজ্য পুলিশের এলাকাতেও।
একটি জেলার এক পুলিশকর্তা জানান, এখন রাতের দিকে ও ভোরে কুয়াশা থাকে। তাই তল্লাশিতে নিযুক্ত পুলিশকর্মীদের আশেপাশে রিফ্লেকটিভ স্টিকার, সোলার ব্লিঙ্কার বা এলইডি আলো লাগাতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে, গাড়ি থামিয়ে গাড়িচালকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তাঁদের চা বা জল খাইয়ে তন্দ্রামুক্ত করতে হবে। বিভিন্ন জেলার পুলিশ সূত্রের খবর, কেউ নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছেন কি না, তা জানতে কোথাও কোথাও ব্রেথ অ্যানালাইজার যন্ত্র দিয়ে চালকদের শ্বাসও পরীক্ষা করা হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, শীতকালে বিশেষত লম্বা সফরে গাড়িচালকদের ঘুম পেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অথচ এই সময়ে কুয়াশা হয় বলেই বাড়তি সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি চালানোর দরকার হয়। তাই এই বিশেষ ব্যবস্থা। তল্লাশিতে থাকা পুলিশকর্মীদের সবিস্তার তথ্য ট্র্যাফিক পুলিশের সদর দফতরের কন্ট্রোল রুমে পাঠাতে বলা হয়েছে। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ভোরের দিকে কুয়াশায় দৃশ্যমানতা কম থাকলে প্রয়োজনে গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখতে হবে। দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাগুলিকে চিহ্নিত করে সেখানে যথাযথ সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।
বিভিন্ন জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পথ-নিরাপত্তা নিয়ে এই সুপারিশের পরে জেলাশাসকেরাও জেলা রোড সেফটি কাউন্সিল বা জেলা সড়ক নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। শীতে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরাও বনভোজনে যান। এই ধরনের পিকনিক পার্টির সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে।