হাম-রুবেলার টিকাকরণের ক্ষেত্রে ‘ইউনিসেফ’-এর মতো সংস্থা রয়েছে রাজ্য সরকারের সঙ্গে। প্রতীকী ছবি।
হাম এবং রুবেলার মতো রোগের টিকাকরণে গতি আনতে চায় রাজ্য সরকার। সেই উদ্দেশ্যে স্কুলস্তরকে কাজে লাগিয়ে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের সচেতনতার লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপও করেছে সরকারপক্ষ। এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদের আস্থা অর্জনে জোর দিচ্ছে সরকার। তাই প্রতিটি স্কুলে যাতে এ নিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়, সে ব্যাপারে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রথম থেকে দশম শ্রেণির সমস্ত ছাত্রছাত্রীকে যাতে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
শিশু ও কিশোরদের হাম এবং রুবেলা খুবই কষ্টদায়ক অসুখ। সঠিক সময়্র চিকিৎসা না করাতে পারলে এই রোগে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই টিকাকরণের মধ্যমেই এই রোগগুলি প্রতিরোধের বিষয়টি স্থির হয়েছে। গ্রামস্তরে এই রোগের টিকাকরণ নিয়ে প্রচারের ক্ষেত্রে বেশ কিছু নেতিবাচক রিপোর্টও হাতে এসেছে রাজ্য সরকারের। তাই স্কুল পর্যায়কে কাজে লাগিয়েই গ্রামীণ মানুষের নেতিবাচক মনোভাব দুর করতে বদ্ধপরিকর রাজ্য। ৯ জানুয়ারি সোমবার থেকে টিকাকরণ শুরু হচ্ছে, চলবে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
প্রসঙ্গত, পোলিও টিকাকরণ কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় সরকারের সক্রিয় ভূমিকা থাকে। আর হাম-রুবেলার টিকাকরণের ক্ষেত্রে ‘ইউনিসেফ’-এর মতো সংস্থা রয়েছে রাজ্য সরকারের সঙ্গে। কিন্তু টিকাকরণ সংক্রান্ত যাবতীয় ঝুক্কি পোয়াতে হবে রাজ্য সরকারকেই। তাই প্রথম থেকেই সাবধানী পদক্ষেপ রাজ্য প্রশাসনের। আর গ্রমস্তরে এই টিকাকরণ সঠিক ভাবে কার্যকর করতে গ্রামীণ চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের সাহায্য চাইছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যে গ্রামীণ ‘মেডিক্যাল প্র্যাকটিশনার’দের সাহায্য নিতে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। কারণ, গ্রামীণ জনতার উপর এই ‘মেডিক্যাল প্র্যাকটিশনার’দের প্রভাব রয়েছে। সেই কারণে টিকাকরণে ১০০ শতাংশ সাফল্য পেতে ওই চিকিৎসকদের যুক্ত করা হচ্ছে।
এ ছাড়াও হাম ও রুবেলা টিকাকরণের জন্য স্কুলে স্কুলে গিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন স্বাস্থ্যকর্তারা। সেই বৈঠকে এই শ্রেণির চিকিৎসকদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। টিকাকরণ কর্মসূচি রূপায়ণে জনজাতি-নেতৃত্ব ও স্থানীয় ধর্মীয় নেতৃত্বের একটি বড় ভূমিকা থাকে। তাঁদের সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের যোগাযোগ করে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে অনুরোধ করা হবে। টিকা নেওয়ার পর জ্বর, ব্যথা ও র্যাশ বের হওয়ার মতো কিছু স্বাভাবিক উপসর্গ দেখা দেয়। এমন উপসর্গ দেখা গেলে গ্রামীণ চিকিৎসকরাই শিশুদের প্রাথমিক চিকিৎসা করবেন। জেলার স্বাস্থ্য প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, প্রাথমিক চিকিৎসার পর কোনও ঝুঁকি না গিয়ে দ্রুত সংশ্লিষ্ট সরকারি হাসপাতালে শিশুদের পাঠিয়ে দিতে হবে। হাম ও রুবেলার টিকাকরণ নিয়ে কোনও ঝুঁকি নিতে নারাজ রাজ্য। কোনও রকম বিতর্ক ছাড়াই যে কোনও মূল্যে এই উদ্যোগ সফল করতে চায় রাজ্য সরকার।