টেন্যান্সি ট্রাইবুনালেও রাজ্যপালের ক্ষমতা ছাঁটাইয়ের পথে রাজ্য সরকার। ফাইল চিত্র।
ট্যাক্সেশন ট্রাইবুনালের পর এ বার ওয়েস্ট বেঙ্গল ল্যান্ড রিফর্মস অ্যান্ড টেন্যান্সি ট্রাইবুনালেও রাজ্যপালের ক্ষমতা ছাঁটাইয়ের পথে রাজ্য সরকার। শুক্রবার এই সংক্রান্ত সংশোধনী বিল আসবে বিধানসভায়। জমি সংক্রান্ত বিবাদ সমাধানের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করে এই ট্রাইবুনাল। সেই সংক্রান্ত অভিযোগের ক্ষেত্রে মানুষ বিচার পেতে ট্রাইবুনালগুলিতে যায়। ট্রাইবুনালগুলির কাজকর্ম স্বাভাবিক রাখতে চায় নবান্ন। তাই এ বার সেই ট্রাইবুনালের নিয়োগ নিজেদের হাতে নিতে চায় সরকার। আর আবারও এমনটা হলে রাজভবনের সঙ্গে নবান্নের সঙ্ঘাত অনিবার্য হবে বলেই মনে করছেন বাংলার রাজনীতির কারবারিরা।
এখনও এই ট্রাইবুনালের নিয়োগের দায়িত্ব রয়েছে রাজ্যপালের হাতেই। কিন্তু আইনে পরিবর্তন ঘটিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা করে রাজ্য সরকার এই ট্রাইবুনালের চেয়ারম্যান ও জুডিশিয়াল সদস্য নিয়োগ করতে চায়। সেই কারণেই বিধানসভা অধিবেশনের একেবারে শেষ দিনের অধিবেশনে সংশোধনী বিলটি আনা হচ্ছে।
চলতি বাদল অধিবেশনেই সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদে রাজ্যপালের বদলে মুখ্যমন্ত্রীকে বসাতে একাধিক বিল পাশ হয়েছে। সঙ্গে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ভিজিটর পদ থেকে রাজ্যপালকে সরিয়ে শিক্ষামন্ত্রীকে বসানোর বিলও এই অধিবেশনেই পাশ করিয়েছে রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার আবার আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদ থেকে রাজ্যপালকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়োগের বিলটি পাশ হয়েছে। আর মঙ্গলবার রাজভবনে বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার পর রাজ্য সরকারের বিল পাশের উদ্যোগ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকেই ‘ল্যান্ড রিফর্মস অ্যান্ড টেন্যান্সি ট্রাইবুনালে’র শীর্ষপদে নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজ্যপালের জায়গায় রাজ্য সরকারকে ক্ষমতা দেওয়ার সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়েছে। এ বার বিধানসভায় বিলটি পাশ করিয়ে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিজেদের হাতে নিতেই বিল পাশ করাচ্ছে রাজ্য সরকার। এই মুহূর্তে এই ট্রাইবুনালের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শঙ্কর আচার্য। আগামী অগস্টে তাঁর মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তাঁর সঙ্গে এই ট্রাইবুনালে আরও তিনজন জুডিশিয়াল সদস্য ও তিনজন অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সদস্য রয়েছেন। অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সদস্যের একটি পদ এই মুহূর্তে খালি রয়েছে। বিলটি পাশ হয়ে গেলেই এই নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা শুরু করতে চায় নবান্ন।
বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতির কথায়, ‘‘আমরা বরাবরই বলে আসছি এই অধিবেশন রাজ্যপালকে সরানোর অধিবেশন। অধিবেশনের শেষদিনেও সেই চিহ্ন রেখে যেতে চাইছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। কিন্তু একটি বিষয় তাঁদের মাথায় থাকা উচিত যে, রাজ্যপাল স্বাক্ষর না করলে কোনও বিলই কার্যকর হবে না।’’
অন্যদিকে বিধানসভার শেষ দিনে আরও একটি বিল পেশ হবে অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধে। বহুতল ভবনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট মাপ কী হবে, তার জন্য নতুন নিয়ম আনতে চলেছে রাজ্য সরকার। শুক্রবার বিধানসভা অধিবেশনে পেশ হবে ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ফায়ার সার্ভিস অ্যামেন্ডমেন্ট বিল ২০২২।’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।