Mukul Roy

ভিন্ন রাজনৈতিক সত্তা নিয়েই বাবার সঙ্গে সম্পর্ক থাকবে, মুকুলকে পাশে নিয়ে বললেন শুভ্রাংশু

এক বাড়িতে থাকলেও, আর একই দলের থেকে রাজনীতি করবেন না পিতা-পুত্র! শনিবার কাঁচরাপাড়ার বাড়িতে বাবা মুকুল রায়ের পাশে দাঁড়িয়ে এমনটাই জানিয়েছেন প্রাক্তন বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৩ ২১:৩৫
Share:

বাংলার রাজনীতির কারবারিদের মধ্যে মুকুল-পুত্রের মন্তব্য নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে। — নিজস্ব চিত্র।

পৃথক রাজনৈতিক সত্তা থাকলেও পিতা-পুত্রের সম্পর্ক বজায় থাকবে। পিতা মুকুল রায়কে পাশে নিয়ে এমনটাই জানালেন পুত্র শুভ্রাংশু রায়। ১২ দিন পর শনিবার দিল্লি থেকে কলকাতায় ফিরেছেন মুকুল। শহরে বেশ কিছুটা সময় কাটিয়ে নিজের কাঁচরাপাড়ার বাড়িতে ফেরেন তিনি। সেখানেই বাবাকে পাশে নিয়ে শুভ্রাংশু বলেন, ‘‘বাবা ছেলের সম্পর্ক কোনও দিনও আলাদা করা যায় না। করা যায় না অস্বীকারও। বাবা বাবার সত্তা নিয়ে চলবেন। আমি আমার সত্তা নিয়েই চলব। কিন্তু সম্পর্ক যে জায়গায় আছে, বাবাকে বাবা বলেই ডাকতে হবে। ওঁরও আমাকে সন্তান হিসেবেই দেখতে হবে।’’

Advertisement

শনিবার দুপুরের বিমানে দিল্লি থেকে কলকাতায় ফেরেন মুকুল। ফিরেই জানিয়ে দেন, ‘‘বিজেপিতেই আছি, প্রয়োজনে আবার দিল্লি যাব।’’ সঙ্গে আরও বলেছিলেন, ‘‘আমার সঙ্গে সবার দেখা হয়েছে। কেউ আমাকে এড়িয়ে যাননি।’’ শুভ্রাংশু যদিও পরে জানান, বাবা ফিরে আসায় তিনি খুশি। তাঁর কথায়, ‘‘বাবা ফিরে আসায় আমি খুশি। এখন আর মা নেই। বাবা পাশে থাকলে নিশ্চয়ই ভাল লাগবে। বাবা ছাড়া মাথার উপরে তো আমার আর কেউ নেই। আমার কোনও ভাইবোনও নেই।’’

বাংলার রাজনীতির কারবারিদের মধ্যে মুকুল-পুত্রের মন্তব্য নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে। কারণ, ২০২১ সালের ১১ জুন বাবাকে সঙ্গে নিয়েই তৃণমূল ভবনে পুরনো দলের ফিরেছিলেন শুভ্রাংশু। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতেই তাঁরা বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেছিলেন তাঁরা। আর সেই শুভ্রাংশুই শনিবার কাঁচরাপাড়ার বাড়িতে বাবার পাশে দাঁড়িয়ে উভয়ের ‘পৃথক সত্তা’য় চলার কথা বললেন। তবে কি মুকুল আর তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চান না? আর এই বিষয়ে ছেলেকে কি নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েই দিল্লি থেকে বাড়িতে ফিরতে রাজি হয়েছেন? এমনই সব প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে রাজনীতির কারবারিদের একাংশের মনে। শুভ্রাংশু যদিও বলছেন, ‘‘ব্যক্তিগত সম্পর্ক সব সময় কর্মী বলুন আর দল, সম্পর্ক সব কিছুর ঊর্ধ্বে।’’

Advertisement

উল্লেখ্য, ১৭ এপ্রিল সন্ধ্যার বিমানে মুকুল তাঁর দুই অনুগামীকে নিয়ে আচমকাই দিল্লি রওনা দেন। বাবা কিছু না জানিয়ে দিল্লি যাওয়ায় বীজপুর ও এয়ারপোর্ট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন শুভ্রাংশু। কিন্তু শনিবার তিনি জানিয়েছেন, বাবার নিখোঁজ হওয়া প্রসঙ্গে পুলিশের কাছে তিনি যে অভিযোগ জানিয়েছিলেন, তা ইতিমধ্যে তুলে নেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মুকুল-পুত্র বলেন, ‘‘বাবা যে হেতু কাউকে না জানিয়ে চলে গিয়েছিলেন। তাই আমি অভিযোগ দায়ের করেছিলাম। কিন্তু বাবা স্বেচ্ছায় গিয়েছেন জেনেই অভিযোগ তুলে নিই।’’

তবে পুত্রের পাশে দাঁড়িয়েই নিজের দিল্লিযাত্রা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে মুকুল বলেন, ‘‘বাড়ি ফিরে স্বস্তি লাগছে।’’ তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, আবার কী দিল্লি যাবেন? জবাবে কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক বলেন, ‘‘প্রয়োজন হলে আবার যাব। আমি তো কখনও বলিনি তো যাব না।’’ বিজেপির কোনও নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘যে কোনও লোকের সঙ্গে যে কেউ সাক্ষাৎ করতে পারেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement