Jiban Krishna Saha

‘ডাবল’ বেতন নেওয়া বিধায়ক জীবনের শিক্ষকতার টাকা বন্ধ করে দিচ্ছে প্রশাসন

বিধায়ক হওয়ার পর স্কুলে শিক্ষকতা না-করেও মাসের পর মাস বেতন নেওয়ায় অভিযুক্ত বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। পাশাপাশি, বিধায়কের বেতন ও ভাতাও নিতেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৩ ১৮:৩৮
Share:

তৃণমূল বিধায়কের জোড়া বেতন নিয়ে বিতর্ক। — ফাইল চিত্র।

বিধায়ক এবং স্কুলশিক্ষক হিসাবে বেতন— দুই-ই নিতেন নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। বিধায়ক হওয়ার পর স্কুলে না গিয়েও মাসের পর মাস বেতন নেওয়ায় অভিযুক্ত তিনি। এ বার তাঁর শিক্ষকতার বেতন বন্ধ হওয়ার মুখে। বড়ঞার বিধায়কের বেতন বন্ধের জন্য সুপারিশ করলেন তাঁর স্কুল কর্তৃপক্ষ৷

Advertisement

২০০৪ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা দিয়ে শুরু। ২০১৩ সালে প্রাথমিকের শিক্ষকতা ছেড়ে বীরভূমের নানুরের দেবগ্রাম হাইস্কুলে কাজে যোগ দেন জীবনকৃষ্ণ। পরে বদলি নিয়ে কুণ্ডল হাইস্কুলে যোগদান করছিলেন ২০২১ সালে। কিন্তু কোনও দিনও এই স্কুলে যাননি বলে জীবনকৃষ্ণের বিরুদ্ধে অভিযোগ। ওই বছরই বিধায়ক নির্বাচিত হওয়ার পরেই স্কুলে ছুটি নেন তিনি। স্কুলে ছুটি নেওয়ার পরেও নিয়মিত বেতন নিয়েছেন জীবনকৃষ্ণ। সঙ্গে নিয়েছেন বিধায়কদের জন্য বরাদ্দ বেতনও। গত ছয় মাস জীবনকৃষ্ণ এক দিনের জন্যও স্কুলে যাননি। এই সময়েও নিয়মিত বেতন নিয়েছেন তিনি। বিধায়ক হওয়ার আগে তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন জীবনকৃষ্ণ। মুর্শিদাবাদ জেলায় রাজনীতি করলেও, বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের কাছে মানুষ হয়ে ওঠেন তিনি। সেই প্রভাব খাটিয়েই ঠিকঠাক স্কুলেও হাজিরা দিতেন না বর্তমানে জেলবন্দি এই বিধায়ক।

সূত্রের খবর, সম্প্রতি তাঁর বেতন বন্ধের সুপারিশ করা হয়েছে নানুরের দেবগ্রাম হাইস্কুলের তরফে। বীরভূম জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক)-এর কাছে এই আবেদনটি পাঠানো হয়েছে। মৌখিক ভাবে বিকাশ ভবনে শিক্ষা ডিরেক্টোরেটকেও বিধায়কের বেতন বন্ধের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহেই এই সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র পৌঁছে যাবে বিকাশ ভবনের ডিরেক্টোরেটে। কারণ শিক্ষকদের বেতন সংক্রান্ত বিষয়ে বিষয়টি দেখভাল করে শিক্ষা ডিরেক্টোরেট। নিয়মমাফিক এই সুপারিশের একটি কপি পাঠানো হবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকেও। এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই তাঁর বেতন বন্ধ হয়ে যাবে। বিকাশ ভবনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, আগামী ১৭ এপ্রিল যে দিন বিধায়ক গ্রেফতার হন, সে দিন থেকেই বেতন বন্ধের সুপারিশ করা হয়েছে। সব কাগজপত্র ঠিক ঠিক হাতে পেলেই দ্রুততার সঙ্গে জীবনকৃষ্ণের বেতন বন্ধ করে দেওয়া হবে।

Advertisement

চলতি মাসের ১৫ এপ্রিল জীবনকৃষ্ণের বড়ঞার বাড়িতে হানা দেন সিবিআই। পাঁচিল টপকে পালানোর চেষ্টা থেকে শুরু করে নিজের দুটি মোবাইল ফোন পুকুরে ফেলে দিয়ে বিতর্ক বাড়িয়ে দেন জীবনকৃষ্ণ। কিন্তু শেষমেশ জেরা শেষে ১৭ এপ্রিল ভোরে তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। বর্তমানে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জেলবন্দি রয়েছেন শাসকদলের এই বিধায়ক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement