পরিজনেদের জন্য দুশ্চিন্তায় ধূপগুড়ির কাবুলিওয়ালারা। নিজস্ব চিত্র।
চার দিন একটানা বন্ধ মোবাইল। কাবুলের পতনের পর আফগানিস্তান জুড়ে নেট পরিষেবাও বেহাল। পরিজনেদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে তাই দুশ্চিন্তায় জলপাইগুড়ি এবং ধূপগুড়ির কাবুলিওয়ালারা।
কয়েকদিন ধরেই নিরবতা গ্রাস করে রয়েছে জলপাইগুড়ি র নয়াবস্তি পাড়া, ধূপগুড়ির ডাকবাংলো পাড়া এবং মাজারশরিফ পাড়ার বাসিন্দা কাবুলিওয়ালাদের বাড়িতে। ধূপগুলির বাসিন্দা খান মহম্মদ, আনোয়ার খান, মামুদ খান,নইম খানদের দাবি,ভারত স্বাধীন হওয়ার অনেক আগেই এ বাড়িতে এসে উঠেছিলেন বাপ-ঠাকুরদারা। মামুদ, নইমদের জন্ম-কর্ম এদেশে। নাগরকত্বও মিলেছে। রয়েছে আধার, ভোটার কার্ড।
মামুদদের দাবি, তাঁরা এখন পুরোপুরি ভারতীয়। তবুও মনের কোণায় এখনও নাড়া দেয় শিকড়টা। বাপ, ঠাকুরদারা ভিটেমাটি ছেড়ে ভারতের বাসিন্দা হলেও হলেও আফগানিস্তানে রয়েছেন অনেক আত্মীয়-পরিজন।
একই অবস্থা বীরভূমের বোলপুর শহরের জামবুনি, টিকিয়াপাড়া, মুলুক,ভুবনডাঙা এলাকায় বসবাসকারী শতাধিক কাবুলিওয়ালা পরিবারেরও। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইঁদু খান জানান, যে তাঁদের পূর্বপুরুষ আফগানিস্তানের পাখতিকা প্রদেশ বাসিন্দা ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ভারতে বহু বছর চলে এসেছি। ২০২০-র আগে ওই প্রদেশের বন্ধু ও আত্মীয় স্বজনেরা চিকিৎসার জন্য ভারতে এসেছিলেন। তবে মাঝেমধ্যে ফোনে কথা হত।’’ কিন্তু ১৪ অগস্ট থেকে কারও সঙ্গে যোগাযোগ যায়নি।’’
হুগলির চুঁচুড়াতেও কয়েক দশক ধরে কাবুলিওয়ালাদের বাস। চকবাজারের একটি পুরোনো বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন তাঁরা। তালিবান বাহিনীর কাবুলের দখলের পর থেকে তাঁরা দুশ্চিন্তায়। তবে চকবাজারের বাসিন্দা আইনুদ্দিন খান বলেন, ‘‘পাকিস্থান যদি ভেবে থাকে তালিবান আসায় তাদের সুবিধা হবে, সেটা ভুল। কারন আফগানিস্তানের এক ইঞ্চি জমিও তালিবান ছাড়বে না। আসলে প্রেসিডেন্ট আশরফ গনি দেশের উন্নতি চাইছিলেন। সেটা পাকিস্তানের সহ্য হয়নি।’’ আইনুদ্দিন জানালেন, তাঁর মা ১৩ আগস্ট আফগানিস্তান থেকে ভারতে এসেছেন। কাবুল এয়ারপোর্টে যাবার সময়ই তালিবান রাস্তায় তাঁকে ধরেছিলেন। কিন্তু ভারতীয় পাসপোর্ট দেখে ছেড়ে দেন।