তালিবান মুখপাত্র জবিউল্লা মুজাহিদ। ছবি: পিটিআই।
কাশ্মীর বিতর্কে ভারতের ছ’দশকের পুরনো অবস্থানেই সায় দিল তালিবান। মঙ্গলবার রাতে কাবুলে সাংবাদিক বৈঠকে তালিবান মুখপাত্র জবিউল্লা মুজাহিদ বলেন, ‘‘কাশ্মীর দ্বিপাক্ষিক এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়। কাশ্মীরে আমাদের কোনও নজর নেই।’’
স্পষ্টতই এ ক্ষেত্রে জবিউল্লা ‘দু’পক্ষ’ বলে ভারত এবং পাকিস্তানকেই বোঝাতে চেয়েছেন। সেই সঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা এখন কারও সঙ্গে শত্রুতার সম্পর্ক তৈরি করতে চাই না।’’ যদিও মোল্লা মহম্মদ ওমরের জমানায় একাধিক বার কাশ্মীরে সক্রিয় পাক জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির প্রতি প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছে তালিবান। এমনকি, ১৯৯৯ সালে ভারতীয় বিমান ছিনতাইকারী জঙ্গিদেরও আশ্রয় দিয়েছিল তারা। জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিলেরও সমালোচনা করেছিল তালিবান।
প্রায় আড়াই দশক পরে আফগানিস্তানে ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের পর তালিবান নেতৃত্ব ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক সম্পর্ক রক্ষায় সচেতন হওয়ার বার্তা দিয়েছেন। মঙ্গলবার রাতের সাংবাদিক বৈঠক এ ক্ষেত্রে তাদের ‘গুরুত্বপূর্ণ বার্তা’ বলে মনে করা হচ্ছে। কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকের একাংশের মতে জবিউল্লার মন্তব্যে স্পষ্ট, তালিবান আর আফগানিস্তানকে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর’ তকমা দিতে রাজি নয়।
অতীতে লস্কর-ই-তইবা, লস্কর-ই-জঙ্গভি, জৈশ-ই-মহম্মদের মতো পাক জঙ্গিগোষ্ঠীকে কাশ্মীরের নাশকতার জন্য প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র-সাহায্যের অভিযোগ উঠেছে তালিবানের বিরুদ্ধে। চলতি মাসেও কয়েকটি পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে জানানো হয়েছিল, লস্কর জঙ্গিরা তালিবান অধিকৃত এলাকায় শিবির খুলেছে। তালিবানের তৈরি চেকপোস্টগুলিতেও কাজ করছে তারা। এই পরিস্থিতিতে তালিবান মুখপাত্রের ‘আশ্বাসবাণী’ ভারতকে কিছুটা স্বস্তি দেবে বলেই মনে করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, বরাবরই রাষ্ট্রপুঞ্জ-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে কাশ্মীরকে ‘দ্বিপাক্ষিক সমস্যা’ হিসেবে চিহ্নিত করে তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতার সম্ভাবনা খারিজ করেছে নয়াদিল্লি।