চার হবু বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী, কৃষ্ণকল্যাণী, সুপ্তি পান্ডে এবং মধুপর্ণা ঠাকুর কি রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের প্রশ্নে শপথ-জটিলতার সম্মুখীন হবেন? গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
রাজভবন-বিধানসভা দ্বৈরথে ভোটে জেতার এক মাস পরে শপথগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রেয়াত হোসেন চৌধুরি। বাংলায় দ্বিতীয় দফা বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ী তৃণমূল প্রার্থীরাও একই সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন বলে আশঙ্কা রাজনৈতিক মহলে। গত ২৪ ঘণ্টার ঘটনাপ্রবাহ সে দিকেই ইঙ্গিত করছে।
রাজ্যের চার বিধানসভা কেন্দ্র— বাগদা, মানিকতলা, রায়গঞ্জ এবং রানাঘাটে উপনির্বাচনের ফল প্রকাশ হয়েছে গত শনিবার। চারটি কেন্দ্রেই জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থীরা। বিধানসভা সূত্রে খবর, আগামী সোমবার তাঁদের বিধানসভায় ডেকে পাঠানোও হয়েছে। অনেকেই মনে করেছিলেন, সায়ন্তিকাদের মতো ওই চার হবু বিধায়ককেও শপথগ্রহণ করাবেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ, সোমবার থেকেই বিধানসভার অধিবেশন শুরু হয়ে যাচ্ছে। আর শপথ নিয়ে বিধায়ক না হলে জয়ী প্রার্থীরা বিধানসভার অধিবেশনে আসতে পারেন না। তাই তাঁদের ডেকে পাঠানোর অর্থ, তাঁরা শপথগ্রহণ করে বিধায়ক হবেন। এমতাবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎই রাজভবন থেকে একটি চিঠি পৌঁছয় বিধানসভায়। বিধানসভা সূত্রে খবর, সেই চিঠিতে রাজভবন দু’টি প্রশ্নের জবাব চেয়েছে বিধানসভার কাছ থেকে। এর মধ্যে একটি প্রশ্নে বিধায়কদের শপথগ্রহণের প্রসঙ্গও রয়েছে।
রাজভবন বিধানসভার কাছে জানতে চেয়েছে, গত উপনির্বাচনে জয়ী সায়ন্তিকাদের শপথবাক্য পাঠ করানোর জন্য রাজ্যপাল বিধানসভার ডেপুটি স্পিকারকে নিজের প্রতিনিধি হিসাবে নিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে রাজ্যপাল জানতে পেরেছেন, সায়ন্তিকা এবং রেয়াতকে শপথগ্রহণ করিয়েছেন স্পিকার বিমান। বিধানসভাকে দেওয়া চিঠিতে রাজভবনের প্রশ্ন, ওই খবর কি সত্যি?
রাজভবনের দ্বিতীয় প্রশ্নটি বিধানসভার অধিবেশন নিয়ে। রাজ্যপাল জানতে চেয়েছেন, বিধানসভার অধিবেশন ‘মুলতবি’ না করে বার বার ‘স্থগিত’ করা হচ্ছে কেন? সাধারণত বিধানসভার অধিবেশন মুলতবি হওয়ার পর আবার অধিবেশন ডাকার জন্য রাজভবন থেকে ‘নোটিফিকেশন’ নিতে হয়। কিন্তু অধিবেশন স্থগিত রাখা হলে তা যে কোনও সময় আবার চালু করা যায়। তার জন্য রাজভবনের অনুমোদনের প্রয়োজন পড়ে না। এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসে বিধানসভার অধিবেশন ‘স্থগিত’ রাখা হয়েছিল। পরে সায়ন্তিকাদের শপথগ্রহণ করানোর জন্যও এক দিনের জন্য অধিবেশন ডেকে আবার তা ‘স্থগিত’ করে দেওয়া হয়। এই দুই বিষয়ে প্রশ্ন তুলে রাজ্যপালের চিঠির পরে অনেকেই মনে করছেন, বিধানসভা উপনির্বাচনের চার জয়ী প্রার্থী— মুকুটমণি অধিকারী, কৃষ্ণ কল্যাণী, মধুপর্ণা ঠাকুর এবং সুপ্তি পাণ্ডের শপথগ্রহণকে কেন্দ্র করে নতুন জটিলতা তৈরি হতে চলেছে।