মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে বেরিয়ে হাতির হানায় ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে রাজ্য সরকার। ফাইল চিত্র।
প্রথম দিন মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে বেরিয়ে হাতির হানায় মৃত্যু হয়েছে এক ছাত্রের। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির চা বাগানেও প্রায়শই চিতার হানার খবর প্রকাশ্যে আসে। কিন্তু মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে বেরিয়ে হাতির হানায় ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে রাজ্য সরকার। এ বার উত্তরবঙ্গের কোচবিহারে জীবজন্তুদের জন্য পৃথক করিডোর গড়ছে রাজ্যের বন দফতর। বন্যপ্রাণীদের হানায় যাতে সাধারণ মানুষের মৃত্যু না হয়, একই সঙ্গে লোকালয়ে চলে এসে কোনও বন্যপ্রাণীও যাতে না মারা যায় সেদিকে বন দফতরকে নজর দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রায় ৫ কিলোমিটার লম্বা ও ২০০ মিটার চওড়া এই করিডরটি তৈরি হবে উত্তরবঙ্গের কোচবিহারে। একসঙ্গে যাতে অনেক প্রাণী ওই করিডর দিয়ে যাতায়াত করতে পারে, তাই ২০০ মিটার চওড়া প্রশস্ত করিডর তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যে পথে ওই করিডরটি তৈরি হবে, তার মধ্যেই রয়েছে জাতীয় সড়ক ও রেলপথ। উত্তরবঙ্গে প্রায়শই শোনা যায়, হাতি-সহ বিভিন্ন জীবজন্তু ট্রেনের ধাক্কায় মারা গিয়েছে। এমন ঘটনা যাতে একেবারেই না ঘটে, তাই করিডর তৈরির ক্ষেত্রে জাতীয় সড়ক ও রেলপথ দুটিকেই এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে। যেখানে সড়ক বা রেলপথ রয়েছে, সেখানে তার অনেক নীচ দিয়ে করিডরটি তৈরি করা হবে।
বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন, নতুন এই করিডরটি তৈরি করতে প্রায় ২৫ কোটি টাকা খরচ হবে। ইতিমধ্যে জমি চিহ্নিত করার পাশাপাশি, প্রাথমিক কাজকর্মও শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা। উত্তরবঙ্গের জীববৈচিত্রের কথা মাথায় রেখেই এই করিডরটি সেখানে তৈরি করা হচ্ছে। কারণ উত্তরবঙ্গের জঙ্গলে হাতি, বাঘ, ভল্লুক, গন্ডার, চিতা-সহ একাধিক বন্যপ্রাণের সমাহার রয়েছে। তাই তাঁদের বন্যজীবন নিরুপদ্রব রাখতে এই করিডর তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। বন দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, অবশ্যই মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিনেই হাতির হানায় ছাত্রের নিহত হওয়ার ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী বনমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু সেই কারণেই যে এই করিডর তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে, এমনটা নয়। কেন্দ্রীয় সরকার এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা মেনে অনেক আগে থেকেই করিডর তৈরিতে হাত দিয়েছে রাজ্য সরকার।