তদন্তে জানা যায়, ওই এলাকার রেললাইনে ফিসপ্লেট আগে থেকেই আলগা করা ছিল অর্থাৎ জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস নিছক দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়নি। ফাইল চিত্র।
জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনার পর ১৩ বছর অতিবাহিত। এত দিনেও শেষ হয়নি তদন্ত! তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের ভূমিকায় বিস্মিত কলকাতা হাই কোর্টের প্রশ্ন, এই মামলায় অভিযুক্তরা দোষী সাব্যস্ত না হয়েই ১০ বছর জেলে বন্দি হয়ে রইলেন! সিবিআই কি মনে করে না তাঁদের কোনও মৌলিক অধিকার আছে? মঙ্গলবার এই মর্মে জ্ঞানেশ্বরী ট্রেন দুর্ঘটনায় অভিযুক্ত ১১ জন সন্দেহভাজন মাওবাদীকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দিল কলকাতা হাই কোর্ট।
২০১০ সালে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঝাড়গ্রামের কাছে লাইনচ্যুত হয় কুরলা লোকমান্য তিলক জ্ঞানেশ্বরী সুপার ডিলাক্স এক্সপ্রেস। ওই ট্রেন দুর্ঘটনায় অন্তত ১৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল। জখম হয়েছিলেন ১৮০ জন। পরে তদন্তে জানা যায়, ওই এলাকার রেললাইনে ফিসপ্লেট আগে থেকেই আলগা করা ছিল অর্থাৎ ঘটনাটি নিছক দুর্ঘটনা নয়। জেনেবুঝে নাশকতা চালানোর চেষ্টা। ঘটনাটি যখন ঘটে, তখন এলাকায় মাওবাদীরা টানা বন্ধ করছিল। ট্রেন দুর্ঘটনার নেপথ্যে মাওবাদীদের ষড়যন্ত্র রয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠে। পরে চক্রান্তে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতারও করা হয় ১১ জন সন্দেহভাজন মাওবাদীকে। মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এই ১১ জনের মৌলিক অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সিবিআইকে ভর্ৎসনা করে তিনি বলেন, ‘‘১৪ বছর আগের ঘটনায় কেন এখনও বিচার শেষ হয়নি, কেন সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করা যায়নি?’’
মঙ্গলবার বিচারপতি বসাকের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চেই উঠেছিল মামলাটি। সিবিআইয়ের তদন্তের মন্থরগতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিচারপতি বসাকের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘‘ভুলে যাবেন না অভিযুক্তদেরও মৌলিক অধিকার রয়েছে। বিনা বিচারে এ ভাবে তাঁদেরও আটকে রাখা যায় না। ১০ বছরের বেশি সময় ধরে জেল খাটছেন তাঁরা।’’
এ মাসের শুরুতেই জ্ঞানেশ্বরী মামলায় আরও কয়েক জন অভিযুক্তকে জামিন দিয়েছিল হাই কোর্ট। মঙ্গলবার যাঁরা জামিন পেলেন, তাঁদের নাম ১) ভোলানাথ মাহাতো ২) রাম মুদি ৩) অমিয় মাহাতো ৪) মহন্ত মাহাতো ৫) সুনীল মাহাতো ৬) মনোজ মাহাতো ৭) লক্ষ্মীকান্ত রায় ৮) জয়দেব মাহাতো ৯) মানিক মাহাতো ১০) জলধর মাহাতো ১১) খগেন মাহাতো।