Students Week

নতুন বছরে সব স্কুলে ‘স্টুডেন্টস উইক’ পালন করে সরকারি প্রকল্পের প্রচারের নির্দেশ শিক্ষা দফতরের

২-৮ জানুয়ারি প্রতি দিন স্কুলে দু’ঘণ্টা এই কর্মসূচির জন্য বরাদ্দ করতে হবে। বেলা ১১ টা থেকে ১টা পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই কর্মসূচি পালন করতে হবে। এই সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা শুভেচ্ছাবার্তার সঙ্গে বইখাতা বিতরণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৩:০৫
Share:

নতুন বছরের শুরুতেই সব সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘স্টুডেন্টড উইক’ পালন করার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা দফতর। —ফাইল চিত্র।

নতুন বছরের শুরুতেই সব সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘স্টুডেন্টড উইক’ পালন করার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা দফতর। মঙ্গলবার শিক্ষা দফতরের তরফে এক নির্দেশিকা জারি করে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে স্কুল, কলেজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ২-৮ জানুয়ারি ‘স্টুডেন্টস উইক’ পালন করতে হবে। সেই নির্দেশিকায় একগুচ্ছ গাইডলাইন দেওয়া হয়েছে। সেই গাইডলাইনে বলা হয়েছে শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য রাজ্য সরকারের তরফে যে সমস্ত প্রকল্প কার্যকর করা হয়েছে, শিক্ষাঙ্গনগুলিতে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচিতে সেই সব প্রকল্পের প্রচার করতে হবে। গাইডলাইনে লিখে দেওয়া হয়েছে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড, স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ, ঐক্যশ্রী এবং প্রি অ্যান্ড পোস্ট ম্যাট্রিক স্কলারশিপের মতো প্রকল্পের প্রচার করতে হবে ‘স্টুডেন্টস উইক’-এ। সরকারি তরফে পুস্তক বণ্টন করে এবং মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছাবার্তা দিয়ে এই প্রচার চালাতে হবে।

Advertisement

২-৮ জানুয়ারি প্রতি দিন স্কুলে দু’ঘণ্টা এই কর্মসূচির জন্য বরাদ্দ করতে হবে। বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই কর্মসূচি পালন করতে হবে স্কুল কর্তৃপক্ষকে। এই সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা শুভেচ্ছাবার্তার সঙ্গে বইখাতা বিতরণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। প্রত্যেক শিক্ষাঙ্গনে যাতে এই কর্মসূচি সঠিক ভাবে পালিত হয় সেই বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে নজরদারি করতে বলা হয়েছে বলে শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর। এই কর্মসূচি পালনের জন্য বিশেষ কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে। কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা নিতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট জেলার জেলাশাসককে। শিক্ষা দফতরের জারি করা নির্দেশ সঠিক ভাবে পালন হচ্ছে কি না সেই বিষয়েও নজরদারি করা হবে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। জেলার শিক্ষা আধিকারিকদের এই কর্মসূচি সফল করতে সব রকম ভাবে উদ্যোগী হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তবে শিক্ষা দফতরের এই নির্দেশকে আবার কড়া সমালোচনার মুখে ফেলেছে বিরোধী শিক্ষক সংগঠনগুলি। অখিল ভারতীয় রাষ্ট্রিয় শৈক্ষিক মহাসংঘের নেতা অনুপম বেরা বলেছেন, “মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে যে দুর্নীতি হয়েছে তার নিরিখে বলতে পারি রাজ্য সরকারের যে কোনও প্রকল্পের প্রচার করা মানে রাজ্য সরকারের দুর্নীতির প্রচার করা। আর গত বার ভোটের সময়ও ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে এই ধরনের প্রচার করেছিল শিক্ষা দফতর। আবার লোকসভা ভোট আসছে বলে, সেই একই ধরনের প্রচার মুখ্যমন্ত্রী ছাত্রদের মধ্যে শুরু করিয়েছেন। তবে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে এই ধরনের প্রচার করা কাম্য নয় বলেই আমরা মনে করি।” আবার বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির তরফে স্বপন মণ্ডল বলেন, “সরকারি কর্মচারীদের ডিএ না দিয়ে সেই অর্থে রাজ্য সরকারের প্রকল্পগুলি চলছে। তাই আমার মনে হয় রাজ্য সরকারের এই বিষয়টিও তুলে ধরা উচিত যে শিক্ষকদের প্রাপ্য অর্থের বিনিময় এই প্রকল্পগুলো চালানো হচ্ছে।” তবে এই সংক্রান্ত বিষয়ে বিরোধী শিক্ষক সংগঠনগুলির সমালোচনা করেছে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি। তাদের তরফে কার্যকরী সভাপতি বিজন সরকার বলেন, “রাজ্য সরকার চাইছে তাদের শুরু করা প্রকল্পগুলির সুবিধা রাজ্যের সব ছাত্র-ছাত্রীর কাছে পৌঁছে দিতে। কোনও ছাত্র-ছাত্রী যদি প্রকল্প প্রসঙ্গে জানতে না পারেন তা হলে তিনি প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। সেই বঞ্চনা যাতে কোনও ছাত্র-ছাত্রীকে স্পর্শ না করতে পারে, সেই ভাবনা থেকেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব সব ছাত্র-ছাত্রীর কাছে সরকারি সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দিয়ে তাদের প্রকৃত ভাবে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া। তাই বিরোধী সংগঠনের বন্ধুদের বলব সব কিছুর মধ্যে বিরোধিতা না দেখে ইতিবাচক দিক দেখার চেষ্টা করুন।”

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement