গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
কেরল থেকে জঙ্গি সন্দেহে পাকড়াও শাব আলি এ রাজ্যে ঘাঁটি গেড়েছিল মুর্শিদাবাদ জেলার হরিহরপাড়ার কেদারতলায়। গোয়েন্দাদের দাবি, বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লা বাংলা টিম বা এবিটি-র অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য শাব আলি তার পুরনো পরিচয়ের সূত্রে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গায় জাল বিস্তার করেছিল। মুর্শিদাবাদের আরও দুই বাসিন্দা আব্বাস আলি ও মিনারুল শেখের সঙ্গেও তখনই তার সখ্য বাড়ে। সম্প্রতি কেরল থেকে শাবকে গ্রেফতার করার পাশাপাশি হরিহরপাড়া থেকে মিনারুল ও আব্বাসকে গ্রেফতার করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শাবের বাবা সোয়েব আলির আদি বাড়ি হরিহরপাড়ার কেদারতলা এলাকায়। তবে বছর চল্লিশ আগে সোয়েব চলে যান বাংলাদেশে। শাবের জন্ম এবং বড় হয়ে ওঠা সেখানেই। কেদারতলা এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা শাবের কাকা আসরাফ শেখ। ছোটবেলা থেকেই শাবের যাতায়াত ছিল কাকার বাড়িতে।
আবার, কাছেই নওদা বিধানসভা এলাকার দুর্লভপুরে শাবের পিসির বাড়ি। বছর বারো আগে পুরোপুরি ভারতে চলে এসে শাব প্রথমে পিসির বাড়িতেই ওঠে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি। পিসির পরিবারের সদস্য হিসেবে ভোটার তালিকাতেও তখন নাম তোলে শাব। পরে আধার কার্ড-সহ অন্য নথিও তৈরি করে। তবে কী ভাবে বা কোন নথি দাখিল করে ভোটার তালিকায় সে নাম তোলে, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। দুর্লভপুর গ্রামেরই বাসিন্দা, নওদা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সহিদুল ইসলাম মণ্ডল বলেন, “ওই নামে আমাদের গ্রামে কোনও বাসিন্দা নেই। আমরা যত দূর জেনেছি ওর এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেশ কিছু দিন ছিল। কী ভাবে ওর নাম ভোটার তালিকায় উঠেছিল, তার খোঁজ নিচ্ছি।”
স্থানীয়দের একাংশের দাবি, পিসির বাড়িতে থাকাকালীন পিঁপড়েখালি এলাকায় বোরখা, বইপত্রের দোকান খোলে শাব। দোকান না চলায় কাকার বাড়িতে চলে আসে। গত পাঁচ-ছ’বছর ধরে কেরলে রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজও করছিল। মাঝেমধ্যে কেদারতলায় ফিরত। বাংলাদেশেও যাতায়াত করত বলে একাংশের দাবি। এই সময় সে কেদারতলায় ভোটার তালিকায় নাম তোলে। হরিহরপাড়ার বিধায়ক নিয়ামত শেখ অবশ্য বলেন, “কী ভাবে ভোটার তালিকায় তার নাম উঠল, তার তদন্ত করুক প্রশাসন।”