কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জগদীপ ধনখড়কে নকল করার সেই সব মুহূর্ত। —ফাইল চিত্র।
উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়কে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নকল করার ঘটনায় প্রতিবাদে এনডিএ সাংসদেরা। বুধবার রাজ্যসভায় এক ঘণ্টা বিজেপি এবং তাদের শরিক দলের সাংসদেরা ধনখড়ের সম্মাননা এবং সমর্থনে দাঁড়িয়ে থাকবেন। জানা গিয়েছে, তৃণমূল সাংসদের আচরণের নিন্দা করে ১০৯ জন এনডিএ সাংসদ মঙ্গলবার রাজ্যসভায় এই প্রতিবাদ জানাবেন।
মঙ্গলবার সংসদ ভবনের মকরদ্বারের সামনে বিরোধী সাংসদদের অবস্থানে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ ধনখড়কে যে ভঙ্গিতে কথা বলেছেন, শরীরী ভাষার প্রয়োগ ঘটিয়েছেন, তা দেখে আগই সমালোচনায় মুখর হয়েছে বিজেপি। কল্যাণের বিষয়টি ধনখড় নিজেও ভাল ভাবে নেননি। তিনি একে ব্যক্তিগত আক্রমণ বলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও তাঁর এ ব্যাপারে কথা হয়েছে জানিয়ে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন উপরাষ্ট্রপতি। এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে তিনি লেখেন, ‘‘তিনি (মোদী) আমাকে বলেছেন, তিনি ২০ বছর ধরে এই ধরনের অপমান সয়েছেন।’’ অন্য দিকে, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুও কল্যাণের কাজে ‘মর্মাহত’। তিনি সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘‘সংসদ চত্বরে আমাদের শ্রদ্ধেয় উপরাষ্ট্রপতিকে যে ভাবে অপমান করা হয়েছে, তা দেখে আমি হতাশ হয়েছি।’’ তিনি আরও লেখেন, ‘‘নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের অবশ্যই নিজেদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকতে হবে। তবে তাঁদের অভিব্যক্তি মর্যাদা এবং সৌজন্যের নিয়মের মধ্যে হওয়া উচিত। যে সংসদীয় ঐতিহ্যের জন্য আমরা গর্বিত এবং যা ভারতের জনগণ আশা করে, সেটি বজায় থাকা উচিত।’’
অন্য দিকে, বুধবার কল্যাণ জানান, উপরাষ্ট্রপতি ধনখড়কে অসম্মান করা তাঁর অভিপ্রায় নয়। ধনখড় সম্মানীয় ব্যক্তি। ইতিপূর্বে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল ছিলেন। তাঁকে সম্মান করেন। শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদের কথায়, ‘‘মিমিক্রি (নকল) করা একটা আর্ট (শিল্প)। আগেও করেছি। আমি তো এটা লোকসভা বা রাজ্যসভায় করিনি। তার পরেও এটা যদি কেউ নিজের দিকে নিয়ে নেন, তাহলে আমি সত্যিই অসহায়। আর উনি কি এটা (যে ভাবে নকল করেছেন) এটা রাজ্যসভাতেও করেন?’’ ’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সংসদে প্রধানমন্ত্রীকেও মিমিক্রি করে দেখেছি।’’
ঘটনাক্রমে এখন দিল্লিতেই রয়েছেন তৃণমূল নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যের বকেয়া নিয়ে বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতেই কল্যাণের প্রসঙ্গ ওঠে। যদিও মমতা জানিয়েছেন, ওই বিষয়টি দেখার জন্য সাংসদেরা রয়েছেন। যা বলার তাঁরাই বলবেন। আর তিনি এবং তাঁর দলের সাংসদেরা সবাইকে সম্মান করেন।