বেহাল: রানিনগরের একটি শিশু শিক্ষা কেন্দ্র এবং ডোমকলের একটি জুনিয়র হাইমাদ্রাসা। ছবি: সফিউল্লা ইসলাম
স্কুলের উঁচু ক্লাসগুলোতে পড়াশোনা শুরু হয়েছিল। তার জন্য দেড় বছরের উপরে বন্ধ স্কুলগুলো সংস্কারের টাকাও দিয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু শিশু শিক্ষা কেন্দ্রগুলো টানা বন্ধই পড়ে রয়েছে। মুর্শিদাবাদের প্রত্যন্ত এলাকার এমন কোনও কেন্দ্র ঢেকে গিয়েছে ঝোপ-ঝাড়ে, কোনওটি আবার গরু-ছাগলের আস্তানা হয়েছে। কর্মীরা বলছেন, মিড ডে মিল নিয়মিত বিলি করা হয়। কিন্তু স্কুল ও চত্বর পরিষ্কার করার টাকা নেই। তাই দুর্ভাবনায় পড়েছেন তাঁরা। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, ঝোপ-জঙ্গল আর জঞ্জালের মধ্যেই মিড ডে মিল বিতরণ করা হয়।
ডোমকল পুরসভা এলাকার শেখালিপাড়ায় একটি শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের হাল এমনই। গরু-ছাগলে দখল নিয়েছে শিক্ষা কেন্দ্রের চত্বর। আর পাশের বাড়ির কাপড়চোপড় মেলার জায়গা হয়েছে এখন শিশু শিক্ষা কেন্দ্র চত্বরে। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, দীর্ঘ দিন কেন্দ্রগুলি বন্ধ থাকার ফলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে সহায়িকা কর্মীরা ইচ্ছে করলে অনায়াসেই শিক্ষা কেন্দ্র চত্বর পরিষ্কার রাখতে পারেন। ডোমকল পুরসভা এলাকার ইসলামটুলি শিশু শিক্ষা কেন্দ্রও ঢেকে গিয়েছে ঝোপঝাড়ে। বিদ্যায়তনের চারপাশে জঙ্গল গজিয়ে উঠেছে। অথচ সেখান থেকেই মিড-ডে-মিল বিতরণ করা হয় বলে জানাচ্ছেন কেন্দ্রের কর্মী তাহিরা বিবি। তাঁর দাবি, ‘‘আমাদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য আলাদা ভাবে কোনও অর্থ দেওয়া হয় না। আর যে ঝোপ-জঙ্গল তৈরি হয়েছে, তা পরিষ্কার করার জন্য শ্রমিক দরকার। এত দিনের আগাছা পরিষ্কার করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। এর মধ্যেই বাধ্য হয়ে আমরা মিড-ডে-মিল বিতরণ করছি। প্রশাসন বা পুরসভার উচিত শিক্ষা কেন্দ্রগুলির দিকে নজর দেওয়া।’’ একই কথা বলেন কাছাকাছি অন্য শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের কর্মীরা।
ডোমকলের বাসিন্দা রেজাউল করিম বলছেন, ‘‘কেবল এই ক’টা কেন্দ্রই নয়, সমস্ত শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের হালই একই রকম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি বেশ কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং জুনিয়র স্কুলও ঝোপ-জঙ্গলে ঢেকে গিয়েছে।’’ মুক্তারপুর এলাকায় একটি জুনিয়র স্কুলের হালও খুবই খারাপ বলে দাবি করছেন এলাকার বাসিন্দারা। ডোমকলের বিডিও পার্থ মণ্ডল বলছেন, ‘‘শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের সহায়িকা ও কর্মীদের রীতিমতো লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে এই সময়ে তাঁদের কেন্দ্র পরিষ্কার রাখতে হবে। তার পরেও কেন ঝোপ-জঙ্গলে ঢেকে যাচ্ছে ওই এলাকা সেটা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ ডোমকল পুর এলাকায় যে শিক্ষা কেন্দ্রগুলি আছে সেগুলির অবস্থা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে ডোমকল পুরসভার তরফে।