বাঁ দিক থেকে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র
ফের বিরোধী দলনেতার আক্রমণের মুখে পড়লেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এ বার রাজীব সিংহকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার পদে বসাতে তাঁর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমঝোতা হয়েছে বলে তোপ দাগলেন শুভেন্দু অধিকারী। বুধবার বিকেলে পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে বিজেপি প্রার্থীদের সঙ্গে নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরে গেলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। পরে সুকান্ত-শুভেন্দু-সহ বিজেপির ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে।
কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাতের পর কি মনোনয়ন নিয়ে তাঁরা আশ্বস্ত? এমন প্রশ্নের জবাবে নন্দীগ্রাম বিধায়ক বলেন, ‘‘সাক্ষাৎপর্বের পরেও কিছুই বদলাবে না। এই কমিশনার মুখ্যমন্ত্রীর নিজের লোক। রাজ্যপালের সঙ্গে সমঝোতা করে একে বসানো হয়েছে। ওঁকে কিছু বলা আর রাস্তায় দাঁড়িয়ে চিৎকার করা একই বিষয়।’’ গত বছর নভেম্বর মাসে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের দায়িত্বে আসেন সিভি আনন্দ বোস। প্রথম দিকে শুভেন্দু নানা কারণে রাজভবনে অভিযোগ জানাতে গেলেও পরবর্তী সময়ে দূরত্ব তৈরি হয় রাজ্যপাল-বিরোধী দলনেতার। সেই দূরত্ব আরও বিস্তৃত হয় ২৬ জানুয়ারি সরস্বতী পুজোর দিন মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে রাজ্যপালের বাংলা শেখার হাতেখড়ি অনুষ্ঠান ঘিরে।
ওই অনুষ্ঠানে বিরোধী দলনেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও, কলকাতায় থেকেও রাজভবনের অনুষ্ঠানে না গিয়ে নিজের প্রতিবাদ স্পষ্ট করে দেন শুভেন্দু। তারপর থেকেই নানা সময়ে আনন্দ বোসের ভুমিকা নিয়ে সমালোচনা শোনা গিয়েছে তাঁর কণ্ঠে। রাজীবকে নির্বাচন কমিশনার করা নিয়েও রাজভবনের সঙ্গে মতানৈক্য তৈরি হয়েছিল নবান্নে। রাজীবের বদলে কমিশনার হিসেবে বিকল্প নাম চেয়েছিল রাজভবন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে রাজীবের নামেই অনড় ছিল নবান্ন। শেষমেশ ৭ জুন তাঁর নামেই সিলমোহর দেয় রাজভবন। দায়িত্ব নিয়েই ৮ জুন পঞ্চায়েত ভোটের ঘোষণা করে দেন রাজীব। সেই সময়েও নতুন কমিশনারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধী দলনেতা। কিন্তু তাঁর নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালের সম্মতির প্রশ্নে নীরব ছিলেন শুভেন্দু। কিন্তু বুধবার নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের পরেই নিয়োগ প্রশ্নে রাজ্যপালের ভুমিকাকেই প্রশ্নে মুখে ফেলে দিলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক।