—প্রতীকী ছবি।
নির্বাচনের প্রস্তুতি-পর্ব থেকেই শুরু হয়ে যায় এলাকার দাগি দুষ্কৃতী ও অস্ত্র উদ্ধারের কাজ। আর নির্বাচন ঘোষণা ও আদর্শ আচরণবিধি চালু হলে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে তা সম্পন্ন করার দায় বর্তায় প্রশাসনের উপরে।
পশ্চিমবঙ্গের অন্যত্র প্রশাসনিক সেই উদ্যোগ দেখা গেলেও উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি এক ও দুই নম্বর ব্লকের সন্দেশখালি থানা, ন্যাজাট থানা এবং রাজবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির অধীনস্থ এলাকায় তা দেখা যাচ্ছে না, এই অভিযোগ তুলেছে সিবিআই।
তদন্তকারীদের দাবি, শেখ শাহজাহানকে নিয়ে তদন্ত চলাকালীন, তাঁর সিন্ডিকেট বাহিনী, স্থানীয় দুষ্কৃতী, তাঁদের কাছে থাকা বেআইনি অস্ত্রের একটি সম্ভাব্য তালিকা সিবিআইয়ের হাতে এসেছে।
পাশাপাশি, নির্বাচনের জন্য রাজ্যের বাকি সব এলাকার মতোই সন্দেশখালি এলাকার দাগি দুষ্কৃতী ও অস্ত্রের তালিকা ইতিমধ্যেই নিবার্চন কমিশনের কাছে জমা দিয়েছে রাজ্য পুলিশ। এই দুই তালিকা মিলিয়ে দেখতে চাইছেন সিবিআই কর্তারা। এক কর্তার কথায়, “আমাদের ধারণা, কমিশনের কাছে জমা দেওয়া প্রশাসনের তালিকার বাইরে আরও অনেক অভিযুক্ত রয়েছেন, যাঁরা বুক ফুলিয়ে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন।”
এই কারণেই, কমিশনের কাছে জমা পড়া সেই তালিকা পেতে রাজ্য পুলিশ ও নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হচ্ছে সিবিআই। তাদের দাবি, উচ্চ আদালতের নির্দেশই রয়েছে, তদন্তে রাজ্য পুলিশকে সহযোগিতা করতে হবে। রাজ্য পুলিশেরও এক শীর্ষ কর্তার কথায়, সিবিআইয়ের তদন্তের ক্ষেত্রে পুলিশের তরফে সমস্ত রকম সহায়তা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি সন্দেশখালির সরবেড়িয়া মল্লিকপুর পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা শাহজাহান ঘনিষ্ঠ আবু তালেব মোল্লার বাড়ি থেকে বিদেশি পিস্তল, রিভলভার, কার্তুজ উদ্ধার হয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, পাওয়া গিয়েছে শাহজাহান ও তাঁর ভাইয়ের নামে অস্ত্রের বৈধ লাইসেন্সও। তাঁদের প্রশ্ন, আদর্শ আচরণবিধি চালু হওয়ার পরেও কী করে রয়ে গিয়েছিল ওই অস্ত্র।
তদন্তকারীদের দাবি, শাহজাহানের বিপুল অস্ত্র ভাণ্ডার এখনও লুকোন রয়েছে সন্দেশখালি এক ও দুই নম্বর ব্লকে তাঁর ঘনিষ্ঠ সিন্ডিকেট বাহিনীর কাছে। সেগুলো উদ্ধারেও স্থানীয় প্রশাসনের কোনও উদ্যোগ নেই বলে সিবিআইয়ের অভিযোগ।
তদন্তকারীদের অভিযোগ, শাহজাহান ও তাঁর ভাই আলমগীর জেলে থাকলেও তাঁদের সিন্ডিকেট বাহিনীর এমন কিছু সদস্য এখনও সশস্ত্র অবস্থায় এলাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, যাদের নাম পুলিশের খাতায় আসামী হিসেবে রয়েছে। তদন্তকারীদের প্রশ্ন, তাঁরা কেন সতর্কতামূলক গ্রেফতারের (প্রিভেনটিভ অ্যারেস্ট) আওতায় পড়বেন না?
সিবিআইয়ের এক আধিকারিকের কথায়, “স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্য পুলিশের তরফে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।”