School Teachers

টিফিনেও বিনা অনুমতিতে বেরোনো যাবে না! স্কুলেও নবান্নের নির্দেশিকা জারি করে দিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ

পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের টিফিনের জন্য যে সময় বরাদ্দ রয়েছে, সেই সময় কোনও শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মী স্কুলের বাইরে যেতে পারবেন না।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২৩ ১৪:১০
Share:

টিফিনের সময় স্কুল থেকে বেরোতে পারবেন না শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীরা, নির্দেশ পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের। — ফাইল চিত্র।

টিফিনের সময় স্কুল থেকে বেরোতে পারবেন না শিক্ষক বা স্কুলের কোনও শিক্ষাকর্মী। সোমবার এই মর্মে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য টিফিনের যে সময় বরাদ্দ রয়েছে, সেই সময় কোনও শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মী স্কুলের বাইরে যেতে পারবেন না। দুপুর দেড়টা থেকে দুটো পর্যন্ত সময়ে তাদের স্কুল চত্বরেই থাকতে হবে। যদি কোনও শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মী সেই নির্দেশ অমান্য করেন তবে তাঁকে অনুপস্থিত বলে ধরা হবে। এর আগে গত শনিবার রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য এই একই নিয়মের কথা বলেছিল নবান্ন। সে ক্ষেত্রে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে সরকারের এমন সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছিল। এ ক্ষেত্রেও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ডেপুটি সেক্রেটারি (অ্যাকাডেমিক) ঋতব্রত চট্টোপাধ্যায়ের জারি করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে নবান্নের বিজ্ঞপ্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

Advertisement

সেই নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে স্কুল চলাকালীন একান্তই যদি কোনও স্কুলশিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীকে বেরোতে হয় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই স্কুলের প্রধানশিক্ষক বা দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকের অনুমতি নিতে হবে। যদি কোনও শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মী নতুন এই নিয়ম না মানেন তবে সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধানশিক্ষক বা জেলা স্কুল পরিদর্শককে এই সংক্রান্ত বিষয়ে রিপোর্ট দিতে হবে শিক্ষা দফতরকে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এমন ঘোষণার তীব্র সমালোচনা করেছে বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ। তাঁদের কথায়, এই নিয়ম চালু করার আগে রাজ্য সরকার স্কুলগুলিতে পর্যাপ্ত শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী নিয়োগ করুক। তা হলে স্কুলে পড়াশোনার প্রকৃত পরিবেশ তৈরি হবে, ফিরে আসবে শৃঙ্খলা। তারপর শিক্ষকদের শৃঙ্খলার পাঠ দিক রাজ্য সরকার। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডল বলেন, “কোনও শিক্ষক খাওয়াদাওয়া করতে বাইরে যেতেই পারেন। আর একটি নির্দিষ্ট সময় রাজ্যের সব স্কুলে টিফিনের বিরতি দেওয়া হয় না। এমনিতে প্রধানশিক্ষকদের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। নতুন করে তাঁদের হাতে এই ক্ষমতা দেওয়ায় তাঁরা সেই ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারেন।” তাঁদের মতে, মহার্ঘ ভাতার দাবিতে শিক্ষকেরা যাতে টিফিনের সময় বিক্ষোভ কর্মসূচিতে শামিল না হতে পারেন, সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।

পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির কার্যকরী সভাপতি বিজন সরকার বলেন, “মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এই নির্দেশিকাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। স্কুলের নিয়মনুবর্তিতা রক্ষার স্বার্থেই এমনটা করা হয়েছে বলে আমরা মনে করি। স্কুলের কাজের সময়ে স্কুলে থাকতে বলা হচ্ছে, এতে বিরোধী সংগঠনের ‘গেল গেল’ রব তোলার কোনও কারণ দেখছি না। শিক্ষকতা করতে এসে পেশার প্রতি দায়বদ্ধতা না দেখিয়ে বেতন বৃদ্ধি নিয়ে আন্দোলন করব, তা শিক্ষকদের জন্য সমীচীন নয়।” তাঁর আরও বক্তব্য, “প্রধানশিক্ষকের সঙ্গে ভাল সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে কোনও কোনও স্কুলশিক্ষক টিফিনের সময় বেরিয়ে ডিএ-র দাবিতে আন্দোলন করছেন। আবার কোনও শিক্ষককে প্রধানশিক্ষকের পছন্দ না থাকলে তাঁকে প্রয়োজনীয় কাজের জন্য ছাড়া হয় না। এমন সব ঘটনাও প্রায়শই ঘটে। এমন ঘটনার প্রবণতা রুখতেই পর্ষদ ওই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।” গরমের ছুটি শেষ হলেই এই নিয়ম কার্যকর হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement