অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ আগেও ৭৭ জন টেট পরীক্ষার্থীকে নিয়োগের নির্দেশ দেন। ফাইল চিত্র।
প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক পদে আরও ১১২ জন টেট পরীক্ষার্থীকে চাকরি দিতে বললেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ। এই নিয়ে মোট ১৮৯ জন টেট পরীক্ষার্থীকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। আর এঁদের প্রত্যেককেই চাকরি দিতে হবে পুজোর আগেই।
পর্ষদের ভুল প্রশ্ন, তার জেরে টেট পরীক্ষার্থীদের প্রাপ্য বাড়তি নম্বর এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পরীক্ষার্থীদের যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টে আবেদন করেছিলেন নূর আলম। তাঁর পক্ষে সওয়াল করেছিলেন আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত এবং অনাথনাথ নস্কর। ওই আবেদনের ভিত্তিতেই ১১২ জন ‘যোগ্য’ প্রার্থীকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এর আগে সোমবার ২৩ জন এবং মঙ্গলবার ৫৪ জনকে চাকরি দিতে বলেছিল বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ।
আদালতের এই নির্দেশের পর মামলাকারীর আইনজীবী সুদীপ্ত বলেন, ‘‘এর আগে আমরা দেখেছি, বেআইনি ভাবে যাঁরা চাকরি পেয়েছিলেন, আদালত তাঁদের চাকরি বাতিল করেছিল। এখন সেই আদালতই যোগ্য প্রার্থীদের চাকরি দেওয়ার ব্যবস্থা করছে।’’
মঙ্গলবারই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ৫৪ জন পরীক্ষার্থীকে নিয়োগের নির্দেশ দিয়ে বলেছিলেন, ২২ দিনের মধ্যে চাকরি দিতে হবে। শূন্যপদ না থাকলে, প্রয়োজনে ভবিষ্যতের শূন্যপদ থেকে চাকরি দিতে হবে। বিচারপতি এ-ও বলেছিলেন যে, ভুল যখন পর্ষদের, তখন তাদেরই ভুলের মাসুল দিয়ে ক্ষতিপূরণ করতে হবে।
ওই ৫৪ জনের চাকরি প্রার্থীর হয়ে আদালতে সওয়াল করেছিলেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং সুদীপ্ত দাশগুপ্ত। তাঁরা বলেছিলেন, চাকরিপ্রার্থীরা ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় বসেছিলেন। ছ’টি প্রশ্নে ভুল থাকায় ২০১৬ সালে তাঁরা টেট পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হন। এখন পর্ষদ সেই ভুল মেনে নিয়ে সব পরীক্ষার্থীকে বাড়তি নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওই বাড়তি নম্বর পেলে এই ৫৪ জনও টেট উত্তীর্ণ হবেন। কারণ, সেই সময়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, এই নিয়োগে প্রশিক্ষিতদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। আর মামলাকারীরা সবাই প্রশিক্ষিত চাকরিপ্রার্থী। অথচ তাঁদের বাদ দিয়ে, প্রশিক্ষিত নন এমন অনেককেই চাকরি দেওয়া হয়েছে। এর পরই আদালত ওই ৫৪ জনের চাকরির আবেদন মঞ্জুর করে।
সোমবারও সোহম রায়চৌধুরী-সহ ২৩ জনকে এই একই যুক্তিতে যোগ্যতার মাপকাঠিতে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। আদালত আগেই বলেছিল, ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে চাকরির দিতে হবে। চাকরি যে দেওয়া হয়েছে, তা পর্ষদকে আদালতে এসে জানাতেও হবে।