মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে আদালতে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করল ইডি। ফাইল চিত্র।
মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে আদালতে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করল ইডি। বুধবার দুপুরে ইডির কর্তারা একটি ট্রাঙ্কে করে চার্জশিট এবং তার সমর্থনে নথিপত্র নিয়ে হাজির হন নগর দায়রা আদালতে। ১৬০ পাতার চার্জশিটের সমর্থনে ওই ট্রাঙ্কে প্রায় ৫০০০ পাতার নথি রয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর। ওই একই সূত্রে এ-ও জানা গিয়েছে যে, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত এই চার্জশিটে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ছাড়াও আরও ৫ জনের নাম রয়েছে। এর মধ্যে মানিকের স্ত্রী, পুত্র, মানিক ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডল ছাড়াও চার্জশিটে অভিযুক্তের তালিকায় রয়েছে ২টি সংস্থার নাম।
প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গত ১০ অক্টোবর মানিককে গ্রেফতার করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। বৃহস্পতিবারই সেই গ্রেফতারির ষাট দিন পূর্ণ হবে। ইডি বুধবার অর্থাৎ ঊনষাটতম দিনে সেই চার্জশিট পেশ করেছে। উল্লেখ্য, এর আগে চার্জশিটে মানিকের নামের উল্লেখ ছিল। তবে সেই চার্জশিটে মানিকের স্ত্রী এবং পুত্রের নাম ছিল না।
প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় টাকার বিনিময়ে চাকরির সুপারিশ দেওয়ার অভিযোগ ছিল মানিকের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে আর্থিক তছরুপের মামলা হওয়ায় প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্টে (পিএমএলএ) এই মামলা হওয়ার কথা মানিকের বিরুদ্ধে। তবে আগের অভিযোগগুলি ছাড়াও ইডির চার্জশিটে মানিকের বিরুদ্ধে বেশ কিছু নতুন অভিযোগ রয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, চার্জশিটে কলেজের অনুমোদন পাইয়ে দেওয়া সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্যও আছে। মানিকের ছেলে শৌভিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে বিএড এবং ডিএলএড কলেজের মানোন্নয়নের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে চার্জশিটে। কিছু দিন আগে মানিকের স্ত্রীর সঙ্গে এক মৃত ব্যক্তির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেও ৩ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছিল।
প্রসঙ্গত, মানিক রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ। কার্যত পার্থের অনুমোদনেই মানিক প্রায় এক দশক প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি ছিলেন বলে রাজনৈতিক বৃত্তের খবর। পার্থ শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীনই নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।
উল্লেখ্য, রাজ্যে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তভার সিবিআইকে দিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ইডির উপর দায়িত্ব ছিল এই দুর্নীতিতে টাকা পাচারের বিষয়টি তদন্ত করার। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক যদিও গ্রেফতারি ঠেকাতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। এমনকি, সিবিআইয়ের কড়া পদক্ষেপ থেকে বাঁচতে শীর্ষ আদালতের কাছ থেকে রক্ষাকবচও পেয়েছিলেন। তবু ইডির তাঁকে গ্রেফতার করতে সমস্যা হয়নি। কারণ ওই বিশেষ নির্দেশ ইডির উপর কার্যকর ছিল না।