(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সিভি আনন্দ বোস (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ক্ষমতার রাশ কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে রাজ্য -রাজভবন দ্বন্দ্ব অব্যাহত। এ ক্ষেত্রে জটিলতা চলছে যাদবপুরের অন্তর্বর্তী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউয়ের অপসারণ ঘিরেও। গত ২৩ ডিসেম্বর বুদ্ধদেবকে অপসারণ করেছিলেন রাজ্যপাল। এর পরে বৃহস্পতিবার রাজভবন থেকে উচ্চ আদালতের এক আদেশের উল্লেখ করে জানানো হয়, এই পরিস্থিতিতে বুদ্ধদেবকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও কাজে হস্তক্ষেপ করতে দেওয়া হবে না। তার পাল্টা হিসেবে শুক্রবার উচ্চশিক্ষা দফতর রেজিস্ট্রারকে জানাল, তারা ২৩ ডিসেম্বর দেওয়া নিজেদের নির্দেশেই অনড় রয়েছে। অর্থাৎ, তারা বুদ্ধদেবকেই অন্তর্বর্তী উপাচার্য বলে মানছে।
এ দিনই আবার রাজভবন থেকে রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্যদের উচ্চ আদালতের নির্দেশ উল্লেখ করে জানানো হয়েছে, উপাচার্য নিয়োগ, পুনর্নিয়োগের ক্ষমতা রাজ্য সরকারের নেই। নিয়োগ, পুনর্নিয়োগ, অস্থায়ী ভাবে নিয়োগ, অপসারণ— সব ক্ষমতা আছে আচার্যের।
রাজভবনের তরফে উচ্চ আদালতের নির্দেশ স্মরণ করিয়ে আরও বলা হয়েছে, উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে বিভিন্ন নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে অন্তর্বর্তী উপাচার্যদের। তাঁরা যেন সে সব নির্দেশ পালনের আগে আচার্যের দফতরের সঙ্গে কথা বলে নেন। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার উচ্চশিক্ষা দফতরের তরফে জানানো হয়েছিল, রাজ্য-রাজ্যপাল মামলায় রাজ্যপালের পক্ষে আইনি খরচ জুগিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি— এমন অভিযোগ খতিয়ে দেখতে কমিটি গড়া হয়েছে। তদন্তের প্রয়োজনে অডিটও করা হবে।
২৩ ডিসেম্বর রাজ্যপাল বুদ্ধদেবকে অন্তর্বর্তী উপাচার্য পদ থেকে আচমকা অপসারণের পর পরই উচ্চশিক্ষা দফতর বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, সমাবর্তন করানোর জন্য বুদ্ধদেবকে বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হল। পাশাপাশি, সুপ্রিম কোর্টের স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশের কথাও উল্লেখ করে তারা। অর্থাৎ, কাউকে নিয়োগ করা যাবে না। অপসারণও করা যাবে না। তার পর থেকে এখনও পর্যন্ত বুদ্ধদেব তিন দিন উপাচার্যের দফতরে গিয়েছেন। তবে ফাইলে সই করছেন না।
এ দিন অবশ্য বুদ্ধদেব উপাচার্যের দফতরে যাননি। ছিলেন নিজের গণিত বিভাগে। তিনি এ দিনও বলেন, ‘‘আমার কাজই আমার উত্তর।’’
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির (জুটা) সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় জানান, বর্তমান পরিস্থিতির বিরুদ্ধে তাঁরা আগামী সপ্তাহে আন্দোলনে নামবেন। তিনি বলেন, ‘‘সব চেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন পড়ুয়ারা। তাঁদের ফিল্ড ট্রিপ-সহ সমস্ত অ্যাকাডেমিক ও আর্থিক অনুমোদন আটকে যাচ্ছে।’’