প্রশান্ত কিশোর।— ফাইল চিত্র
পুরপ্রধান কেমন মানুষ? এলাকা উন্নয়নের কাজ কি ঠিকমতো হচ্ছে? দিনহাটা পুরসভার পুরপ্রধান উদয়ন গুহ থেকে কোচবিহারের পুরপ্রধান ভূষণ সিংহকে নিয়ে এমনই প্রশ্নমালা সাজিয়ে আসরে নেমেছে টিম পিকে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, কোচবিহার জেলার ছ’টি পুরসভাতেই নেমেছে টিম পিকে’র সদস্যেরা। এলাকায় এলাকায় ঘুরে নতুন নতুন নামও তুলে আনা হচ্ছে। এলাকায় বিশেষ পরিচিতি রয়েছে এমন কোনও ব্যক্তি বা সামাজিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন, সেরকম কোনও ব্যক্তির নাম নথিভুক্ত করা হচ্ছে। অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক, সরকারি কর্মীদেরও তালিকা তৈরি হচ্ছে। প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সেই জায়গা থেকেই নাম প্রস্তাব করা হতে পারে। সে খবর পৌঁছে গিয়েছে তৃণমূলের কাউন্সিলর ও পুরপ্রধানদের কাছেও। তাই গদি বাঁচাতে আসরে নেমে নিজেদের প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করছেন সবাই। ভাবমূর্তি ফেরাতেও তৎপর হয়েছেন একাধিক কাউন্সিল।
দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ ইতিমধ্যেই বাড়ি বাড়ি ঘুরতে শুরু করছেন। পুরসভার বাসিন্দাদের সঙ্গে সঙ্গে আলাদা ভাবে বৈঠকও করছেন। তিনি অবশ্য টিম পিকে নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তিনি বলেন, “আমরা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরছি। মানুষের কাছে নিজেদের কথা তুলে ধরছি। উন্নয়ন এবং বর্তমান পরিস্থিতি দেখে যদি মানুষ ভোট দেন, তাহলে তৃণমূল বিপুল ভোটে জয়ী হবে।”
কোচবিহার পুরসভার চেয়াম্যান ভুষণ সিংহও ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে জনসংযোগ শুরু করেছেন। প্রশাসনের সংযোগ কর্মসূচি নিয়েও তিনি মানুষের কাছে যাচ্ছেন। পরিষেবা সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে তাঁকে একাধিক বার ইতিমধ্যেই বাসিন্দাদের ক্ষোভের মধ্যে পড়তে হয়েছে। তিনি বলেন, “আমি শুনেছি দলীয় স্তরে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। দুই-একজনের জন্য লোকসভায় আমাদের পিছিয়ে পড়তে হয়। এখন পরিস্থিতি অন্যরকম। তবে দল যা সিদ্ধান্ত নেবে আমরা মেনে নেব।”
জেলায় কোচবিহার, দিনহাটা বাদেও মাথাভাঙা, তুফানগঞ্জ, মেখলিগঞ্জ এবং হলদিবাড়ি পুরসভায় নির্বাচন হবে। গত লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে যার সবক’টিতে ফল খারাপ হয়েছিল তৃণমূলের। দল মনে করছে, এমন অবস্থায় ভোট হলে একটি পুরসভাও দখলে রাখা চাপ হবে তৃণমূলের কাছে। টিম পিকে সমীক্ষায় নেমে বুঝতে পারে, কাউন্সিলর থেকে শুরু করে পুরপ্রধান— অনেকের বিরুদ্ধেই ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে স্থানীয় ভোটাদের। শুধু পরিষেবা নয়, ব্যাপক দুর্নীতি এবং নেতা-কাউন্সিলদের দাপট, অহংকার কাজ করছে পিছিয়ে পড়ার জন্য। এমনকি কাটমানি ফেরানোর দাবিতে মেখলিগঞ্জ থকে শুরু করে একাধিক জায়গায় কাউন্সিলরদের ঘিরে বিক্ষোভও হয়। সেই জন্যই দল এবারে আমূল পরিবর্তন চাইছে।
তৃণমূলের এক জেলা নেতা বলেন, “এ কথা অস্বীকারের জায়গা নেই, অনেকের বিরুদ্ধেই এমন অভিযোগ রয়েছে। টিম পিকে সেই সব রিপোর্ট দলকে জানাবে।”