শনিবার পুরো স্কুল হবে না কি অর্ধেক হবে, সেই তথ্য আগাম জানতে না পেরে অনেক পড়ুয়াই টিফিন আনেনি। চাঁদা তুলে তাদের টিফিন খাওয়াল হাওড়ার দুইল্যা পাঁচপাড়া স্কুল।
গত ১৬ নভেম্বর স্কুল খোলার পরে টিফিন পিরিয়ডে বাইরে বেরিয়ে খাওয়া বারণ। সরকারি স্কুলে নবম ও একাদশের পড়ুয়াদের স্কুলে আসার সময় সাড়ে নটা করে দেওয়া হয়েছে। এত সকালে অনেকের বাড়িতেই টিফিন তৈরি করে দেওয়া সম্ভব নয়। অনেকের বাড়িতে আবার টিফিন তৈরি করে দেওয়ার লোকও নেই। আর্থিক ভাবে দুর্বল পরিবারের পড়ুয়াদের টিফিন আনার সামর্থ্য নেই। এ দিকে নতুন নিয়মে, পয়সা দিয়ে যে বাইরে থেকে টিফিন কিনে খাবে, সেই উপায়ও নেই। ফলে বহু পড়ুয়া অভুক্ত থেকে যাচ্ছিল বলে জানিয়েছিলেন শিক্ষকরা।
দুইল্যা পাঁচপাড়া স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুকুমার দাস জানিয়েছেন, শনিবার টিফিন আনা পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল খুবই কম। কারণ, বেশ কিছু পড়ুয়া জানত না যে শনিবার পুরো স্কুল হবে। সুকুমারবাবুর কথায়, “আমরা আগে থেকে বলে দিয়েছিলাম যে শনিবার পুরো স্কুল। কিন্তু সবাই তো সবদিন আসছে না। ফলে খবরটা সবার কাছে পৌঁছয়নি। অনেকেই টিফিন আনেনি।”
টিফিন পিরিয়ডে প্রধান অন্যান্য শিক্ষকেরা মিলে পড়ুয়াদের হাতে খাবার তুলে দেন। শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, করোনাকালে বাইরের মুখোরোচক খাবার খাওয়ানো যাবে না। তাই প্যাকেট করা কেক ও একটি করে কলা দেওয়া হয়েছে।
ওই স্কুলের এক শিক্ষিকা সুমনা সেনগুপ্ত বলেন, “আমাদের স্কুলে অনেক গরিব পড়ুয়া আছে, যারা টিফিন আনতে পারে না। অথচ আমরা রোজ নানারকম খাবার খাচ্ছি, এটা খুব খারাপ লাগত। তাই, ঠিক করলাম চাঁদা তুলে অন্তত একটা দিন সব পাড়ুয়াকে টিফিন খাওয়াব।”
স্কুল জানিয়েছে, চাঁদা তুলে এ ভাবে ৬৫ জন পড়ুয়ার টিফিনের ব্যবস্থা হয়েছে। এক শিক্ষিকা জানান, সোম থেকে শুক্র অনেক বেশি পড়ুয়া আসে। শনিবার বলে কম পড়ুয়া। রোজ সমস্ত পড়ুয়াদের টিফিন খাওয়ানো হয়তো সম্ভব নয়। তবে চাঁদা তুলে একটা টিফিনের ফান্ড তৈরি করাই যায়। যে সব গরিব পড়ুয়া কোনওদিন টিফিন আনতে পারে না, তাদের জন্য মাঝেমধ্যে টিফিনের ব্যবস্থা করা যেতেই পারে।