ইডি দফতর থেকে বেরিয়ে আসছেন গোপাল দলপতি। নিজস্ব চিত্র।
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট (ইডি)-র দফতর থেকে প্রায় ১২ ঘণ্টা জেরার পর বেরোলেন মানিক ভট্টাচার্যের ‘ঘনিষ্ঠ’ তাপস মণ্ডল এবং গোপাল দলপতি। গোপালের কাছে বেশ কিছু নথি চেয়েছেন ইডি আধিকারিকরা। আগামী ৭ দিনের মধ্যে সেই সমস্ত নথি জমা করতে বলা হয়েছে।
রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে ইডি-র মুখোমুখি হতে মঙ্গলবার সকালে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে একসঙ্গে হাজির হন গোপাল এবং তাপস। মঙ্গলবার গভীর রাতে দু’জনকে ইডির অফিস থেকে বার হতে দেখা যায়। রাতে বেরোনোর সময় তাপস বলেন, ‘‘কুন্তল গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই বলে আসছে, গোপাল আর আমি একসঙ্গে মিলে চক্রান্ত করেছি। এবং গোপালকে ও সমস্ত টাকা দিয়েছে। গোপালের সঙ্গে গত চার বছর ধরে আমার দেখাই হয়নি। আমি জানতাম অর্থলগ্নি মামলায় গোপাল তিহাড় জেলে রয়েছে। পরে ইডি আধিকারিকরা আমায় জানান যে, জেল থেকে ও বহু দিন আগেই ছাড়া পেয়েছে। এই খবর শুনে আমি ২৮ জানুয়ারি পূর্ব মেদিনীপুরে ওর বাড়িতে যাই। অনেক খোঁজখবর নিয়ে ওঁকে খুঁজে আজ ইডি আধিকারিকদের সামনে আনি। এত ক্ষণ কুন্তল এবং গোপালকে মুখোমুখি বসিয়েই জেরা করেছে ইডি।’’
ইডির অফিস থেকে বেরোনোর সময় গোপালও কিছু কথা বলেন। তাঁর কথায়, ‘‘তদন্তে আমি সাহায্য করছি। আবার যে দিন আমায় ডাকবে সে দিনই আসব।’’ কুন্তল বা শান্তনুর সঙ্গে লেনদেন সংক্রান্ত কোনও রকম চুক্তি হয়েছিল কি না সে প্রশ্নে গোপাল বলেন, ‘‘এই রকম কোনও ডিল কখনও হয়নি। আমি এর আগে কুন্তলকে চিনতাম না। তাপসদাই পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন।’’ তিনি আরও জানান, কুন্তল এবং তাঁকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হয়েছে মঙ্গলবার। তাঁর কাছ থেকে কিছু নথি চেয়েছে ইডি। আগামী ৭ দিনের মধ্যে সেগুলি জমা দিতে বলা হয়েছে।
কুন্তলকে প্রাথমিক জেরার পর ইডি দাবি করে, টাকা লেনদেনের সময় কুন্তলের সঙ্গে ছিলেন বেসরকারি কলেজ সংগঠনের নেতা তাপস মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ গোপাল। তাঁর মহিষবাথানের অফিসে বসেই টাকা নিতেন বলে গোপালের বিরুদ্ধে দাবি করেছিলেন তাপসও। যদিও তাপসের এই অভিযোগ মঙ্গলবার অস্বীকার করেছেন গোপাল। সিজিও কমপ্লেক্সে ঢোকার মুখে তিনি বলেন, ‘‘সব মিথ্যে কথা। টাকা নেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই।’’ অন্য দিকে তাপসের দাবি, ২০১৭ সাল নাগাদ বিভিন্ন সময়ে গোপাল প্রাইমারির চাকরিপ্রার্থীদের দেওয়া প্রায় ৯৪ লাখ টাকা কুন্তলকে দিয়েছেন। এবং তাঁর ডায়েরিতে সেটা ‘রিসিভ’ করিয়ে রেখেছেন।