তৃণমূলের নদীভাঙন সংক্রান্ত বিষয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।
নদীভাঙন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল পাঠানোর কথা ছিল রাজ্যের। সেই প্রতিনিধিদলে থাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বিজেপি পরিষদীয় দলকে। কিন্তু সেই প্রস্তাবে না করে দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় সংবাদমাধ্যমের এই সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দেন তিনি। শুভেন্দু বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রাজ্যের দাবি নিয়ে আমরা তৃণমূলের সঙ্গে কোনও প্রতিনিধিদলে যোগ দেব না।”
কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলে সরকারের প্রস্তাব আমাদের পাঠাতে বলি। কিন্তু আমার সঙ্গে কথা বলার পরেই দেখি বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়ে যায়। আমরা সরকারের হাতে ব্যবহার হতে আসিনি। আমার আর পরিষদীয় মন্ত্রীর কথা কী ভাবে প্রকাশ্যে আসে? তা ছাড়া, এই সরকারের হাতে ভোট-পরবর্তী সন্ত্রাসে মগরাহাট পশ্চিমের বিজেপি প্রার্থী মানস সাহা-সহ ৫৩ জন কর্মী খুন হয়েছেন। তাই এমন দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে যাব না।”
পাল্টা বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ এনেছেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “আমার ও বিরোধী দলনেতার মধ্যে যে আলোচনা হয়েছিল তা-ও রাজ্যের মানুষের স্বার্থে। রাজ্যের মানুষের স্বার্থে আলোচনা হয়েছিল বলেই আমি তা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছি। আসলে রাজ্যের উন্নয়নের স্বার্থে বিজেপি নেতৃত্ব আগ্রহী নয়। তাই বিরোধী দলনেতা অজুহাত দেখিয়ে আমাদের সঙ্গে কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের দাবি জানাতে অস্বীকার করেছেন। তিনি আরও বলেন, “বামফ্রন্ট সরকারে থাকাকালীন বিরোধী বিধায়ক হিসাবে আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বহু বার দাবি জানাতে একসঙ্গে গিয়েছি। কিন্তু কখনও আমরা সেখানে এই ধরনের রাজনীতি করিনি যেখানে রাজ্যের স্বার্থ জড়িত রয়েছে।” প্রসঙ্গত, শীতকালীন অধিবেশনে রাজ্যের গঙ্গাভাঙন পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল পাঠানোর প্রস্তাব এনেছিলেন পরিষদীয় মন্ত্রী। এমন প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্যসচেতক মনোজ টিগগা জানিয়েছিলেন, রাজ্য সরকারের প্রস্তাব পেলে অবশ্যই তাঁরা বিষয়টি বিবেচনা করে দেখবেন। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিষয়টি জানার পরেই শুভেন্দু জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রের কাছে কী ধরনের প্রস্তাব পাঠাতে চায় রাজ্য, তা জানার পরেই সিদ্ধান্ত জানাবেন তিনি। গত ১২ ডিসেম্বর বিষয়টি নিয়ে ফোনে কথা হয় পরিষদীয় মন্ত্রী ও বিরোধী দলনেতার। শোভনদেবের কাছে সরকারের তরফে লিখিত প্রস্তাব চান শুভেন্দু।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলে বিরোধী দলনেতার দফতরে লিখিত ভাবে সরকারি প্রস্তাব পাঠিয়ে দেন শোভনদেব। সেই প্রস্তাব দফতর থেকে পাঠানো হয়েছিল বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের কাছে। একটি কপি দেওয়া হয় বিজেপির পরিষদীয় দলের মুখ্যসচেতকের কাছে। তার পরেই তৃণমূলের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সর্বদলীয় প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসাবে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।