আনন্দবাজার অনলাইন পড়ে সূত্র উল্লেখ শুভেন্দুর। —ফাইল ছবি।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে রাজ্য সরকার ১০ হাজার কোটি টাকা ঋণের আবেদন করেছে। শুক্রবার টুইটে এমন দাবিই করেছিলেন বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। দুপুরে এই সংক্রান্ত টুইটে টাকার অঙ্ক জানালেও কোথা থেকে তিনি এই হিসাব পেয়েছেন তা স্পষ্ট ছিল না। সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইনের প্রতিবেদনে। কোন সূত্রের ভিত্তিতে তিনি ওই টুইট করেছিলেন, আনন্দবাজার অনলাইনের খবর পড়ে তা-ও এ বার জানালেন শুভেন্দু।
শুভেন্দুর প্রথম টুইটের ভিত্তিতে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ আনন্দবাজার অনলাইনে এই সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। তার ঘণ্টাখানেক পরে সেই প্রতিবেদনকে ট্যাগ করে ‘সূত্র’ দাখিল করেন শুভেন্দু। তিনি লেখেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ যে বিপুল ঋণভারে জর্জরিত তা প্রকাশ্যে আনার জন্য আমি আনন্দবাজার অনলাইনকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। কিন্তু এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমি আমার দাবির সপক্ষে সূত্র উল্লেখ করিনি। এই রইল সূত্র।’’
প্রসঙ্গত, শুক্রবার দুপুরের টুইটে শুভেন্দু দাবি করেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে ১০ হাজার কোটি টাকা ঋণের আবেদন জানিয়েছে। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে, পশ্চিমবঙ্গ ইতিমধ্যেই আইনত ঋণ নেওয়ার ঊর্ধ্বসীমা ছাপিয়ে গিয়েছে। উদ্বেগের কথা হল, বাংলার ঋণের বোঝা প্রায় ৬ লক্ষ কোটি টাকা।’’
শুভেন্দুর তুলে দেওয়া পরিসংখ্যানে রয়েছে, ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রতি অর্থবর্ষে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কত টাকা ঋণ বাবদ নিয়েছে তার সারণি। ঘটনাচক্রে, সেই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের এক জন সাংসদ শুভেন্দু। একুশের নীলবাড়ির লড়াইয়ের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। বর্তমানে নন্দীগ্রামের বিধায়কের দাবি, রাজ্য সরকারের ওই টাকা চেয়ে আবেদনের ফাইল অর্থ মন্ত্রকে আটকে রয়েছে। ঋণ মঞ্জুর না হলে রাজ্য সরকারি কর্মীদের বেতন বন্ধ হয়ে যাবে।
এখানেই শেষ নয়, শুভেন্দু টুইটে দাবি করেন, পরিকাঠামো উন্নয়নের খাতে ঋণের আবেদন করলেও সেই টাকা নাকি রাজ্য সরকার লক্ষ্মীর ভান্ডার এবং কর্মীদের বেতন দিতে খরচ করবে। তাই ঋণ যেন মঞ্জুর করা না হয়, কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতার। তৃণমূল অবশ্য শুভেন্দুর বক্তব্যের পর তাঁকেই পাল্টা কটাক্ষ করে। তৃণমূলের বর্ষীয়ান বিধায়ক তথা মুখপাত্র তাপস রায় বলেন, ‘‘উনি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর নাকি! ওঁর তো এত মাথাব্যথার কারণ নেই।’’
এই প্রেক্ষিতেই আনন্দবাজার অনলাইনের প্রতিবেদনে শুভেন্দুর টুইট এবং তার পর সংবাদমাধ্যমে বলা বক্তব্য তুলে ধরা হয়। জানানো হয়, এই অভিযোগের সপক্ষে কোনও সূত্র উল্লেখ করেননি তিনি। প্রতিবেদনে তৃণমূলের প্রতিক্রিয়াও ছিল। তার পর রাত পৌনে আটটা নাগাদ আবার টুইট করেন শুভেন্দু। তাতে আনন্দবাজার অনলাইনের নাম করে সূত্রের উল্লেখ করেন তিনি।