টুইটে অভিযোগ তুলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে ১০ হাজার কোটা টাকা ঋণের আবেদন করেছে বলে দাবি করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। একই সঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, দেশের আইন অনুযায়ী কোনও রাজ্য সরকার যতটা ঋণ করতে পারে তার সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই রাজ্যের কাঁধে ৬ লক্ষ কোটি টাকার ঋণের বোঝা রয়েছে বলে দাবি করে বছর অনুযায়ী একটি হিসাবও টুইটের মাধ্যমে পেশ করেছেন শুভেন্দু। তাতে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরের ১৩ বছরের ঋণ নেওয়ার হিসাবও দিয়েছেন। তবে কোথা থেকে এই হিসাব তিনি পেয়েছেন তার উল্লেখ নেই শুভেন্দুর টুইটে। এই টুইট প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র তাপস রায় বলেন, ‘‘উনি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর নাকি! ওঁর তো এত মাথাব্যথার কারণ নেই।’’
২০১১ সালের মে মাসে রাজ্যে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। শুভেন্দু হিসাব দিয়েছেন ২০১১-১২ থেকে ২০২২-২৩ আর্থিক বছরের। প্রতি বছর কী ভাবে রাজ্যের নেওয়া ঋণের পরিমাণ বেড়েছে তার হিসাব দিয়ে একটি গ্রাফিকও রয়েছে শুভেন্দুর টুইটে। দাবি করা হয়েছে, এখনও পর্যন্ত রাজ্যের ঋণের পরিমাণ প্রায় ৬ লক্ষ কোটি টাকা। টুইট করার পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গেও এ নিয়ে কথা বলেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে ১০ হাজার কোটি টাকা ঋণ চেয়ে ফাইল পাঠিয়েছে। সেই ফাইল ইন্টারনাল ফিনান্সে আটকে রয়েছে নর্থব্লকে।” এর পরেই তিনি দাবি করেন, “কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী যদি তাতে অনুমোদন দেন তাহলে বেতন হবে। আর তা না দিলে বেতন বন্ধ হয়ে যাবে।”
এই টুইটারে রাজ্যের অর্থসচিবের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়াকেও ট্যাগ করেছেন শুভেন্দু। সেই সঙ্গে অভিযোগ তুলেছেন, রাজ্য যে ঋণের আবেদন করেছে সেটা রাজ্যের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য হলেও আদতে তা খরচ করা হবে সরকারি কর্মীদের বেতন এবং লক্ষ্মী ভান্ডার প্রকল্পের জন্য। একই সঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, রাজ্যে অনেক ভুয়ো সরকারি কর্মী রয়েছেন এবং লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পেও এমন অনেক নাম রয়েছে যাঁরা টাকা পেতে পারেন না। রাজ্য ঋণের টাকা পেলে সরকারি কোষাগারের অর্থ অপচয় হবে বলে দাবি করে কেন্দ্রীয় সরকার যাতে ঋণ মঞ্জুর না করে সেই আবেদনও জানিয়েছেন শুভেন্দু। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক যাতে রাজ্যকে আয় বাড়ানোর এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার পরামর্শ দেয় সে আবেদনও করেছেন তিনি।
শুভেন্দুর এই টুইট প্রসঙ্গে তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তাপস রায় আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘উনি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরও নন, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীও নন। ওঁর এত মাথাব্যথার দরকারও নেই। মাথাব্যথা তো ওদের (রিজার্ভ ব্যাঙ্ক) হবে আর বাংলা যিনি চালাচ্ছেন মানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হবে।’’