শিশির অধিকারীর ছবি ও মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে নেটমাধ্যমে ‘বাবাকে বলো’-র প্রচার করছে তৃণমূল কর্মীরা, ক্ষুব্ধ শুভেন্দু অধিকারী। নিজস্ব চিত্র।
শুভেন্দু অধিকারী যখনই দলত্যাগ বিরোধী আইনের কথা বলবেন তখনই তাঁকে বলবেন ‘বাবাকে বলো’। নেটমাধ্যমে তৃণমূলের পক্ষ থেকে সাংসদ শিশির অধিকারীর মোবাইল নম্বর দিয়ে এমনই প্রচার শুরু হয়েছে। এমন প্রচারে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যাঁরা এমন প্রচার করছেন মানুষ তাঁদের গায়ে থুতু দেবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার বিধানসভায় রাজ্যপালের বাজেট বক্তৃতা নিয়ে আলোচনার সময় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে উদ্দেশ্য করে তির্যক মন্তব্য করেন নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক। তিনি বলেন, ‘‘আমরা (তৃণমূল) লোকসভা ভোটে ১৮টি আসন হারিয়ে একটি কর্মসূচি নিয়েছিলাম। যেখানে আমরা বলেছিলাম কন্যাশ্রী না পেলে দিদিকে বলো। রূপশ্রী না পেলে দিদিকে বলো। তাই বলছি দলত্যাগ বিরোধী আইন নিয়ে বিরোধী দলনেতাকে বলব, আপনি বাবাকে বলো কর্মসূচি নিন।’’
মঙ্গলবার বিধানসভায় এমন ঘটনার পর বুধবার সকাল থেকেই তৃণমূলের কর্মীরা নেটমাধ্যমে কাঁথির সাংসদের মোবাইল নম্বরের সঙ্গে তাঁর ছবি ও বিজেপি-র পদ্ম প্রতীক দিয়ে ‘বাবাকে বলো’ প্রচার শুরু করেছেন। বিষয়টি নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া পেতে কাঁথির সাংসদকে ফোন করা হলে তাঁর মোবাইল বন্ধ ছিল। আর বাবার মোবাইল নম্বর দিয়ে তৃণমূলের এমন প্রচারের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিরোধী দলনেতা। তিনি বলেছেন, ‘‘যাঁরা এমন কাজ করছেন। তাঁদের গায়ে মানুষ থুতু দেবে।’’
প্রসঙ্গত, বিধানসভা ভোটের প্রচারে ২১ মার্চ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরায় এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই সভায় হাজির হয়ে তৃণমূল তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে বক্তৃতা করেছিলেন কাঁথির তৃণমূল সাংসদ শিশির। দলত্যাগ বিরোধী আইনে সুনীল মণ্ডলের সাংসদ পদ খারিজের দাবিতে গত ৪ জানুয়ারি স্পিকারকে প্রথম চিঠি দিয়েছিলেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর ২ মে ভোটপর্ব মিটে যেতে গত ১২ মে আবার সুনীলের সাংসদ পদ খারিজের দাবিতে লোকসভার স্পিকারকে চিঠি দেন তিনি। একই ভাবে দলত্যাগ-বিরোধী আইনেই শিশিরেরও সাংসদপদ খারিজের দাবিতে ১৭ মে স্পিকারকে চিঠি দেন সুদীপ।
২ মে মুকুল রায় কৃষ্ণনগর উত্তর আসন থেকে বিজেপি-র বিধায়ক হয়েও, ১১ জুন মুকুল বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। এরপরেই তাঁর বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করতে উদ্যোগী হন শুভেন্দু। চলতি মাসের ১৬ তারিখে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় এই আবেদনের শুনানির দিন ধার্য করেছেন। শুভেন্দুর সেই উদ্যোগকে লক্ষ্য করেই নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ককে তাঁর বাবার অবস্থান স্মরণ করিয়ে কটাক্ষ করে ‘বাবাকে বলো’ কর্মসূচি নিতে বলেন। আর সেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই নেটমাধ্যমেও শুভেন্দু-শিশিরকে ঘিরে এই প্রচার শুরু করেন তৃণমূলের নিচুতলার কর্মীরা।