(বাঁ দিকে) সুকান্ত মজুমদার। শুভেন্দু অধিকারী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সাম্প্রতিক বক্তব্য নিয়ে বিজেপির অন্দরেই যে ‘বিতর্ক’ তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাইলেন না বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সুকান্ত যা বলেছেন, তা তাঁর অভিজ্ঞতার কথা বলে বর্ণনা করেছেন শুভেন্দু। পাশাপাশিই তাঁর অভিযোগ, সংবাদমাধ্যমের একাংশ এ নিয়ে ‘জল্পনা’ তৈরি করতে চাইছে।
গত রবিবার হগলিতে সভা করতে গিয়েছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত। হিন্দমোটরের সভায় সুকান্তকে বলতে শোনা যায়, ‘‘দাদা, সিবিআইকে বলুন একে অ্যারেস্ট করিয়ে দিতে। আমরা জিতে যাব। হবে না!’’ এর পর উদাহরণ দিয়ে সুকান্ত বলেন, ‘‘অনুব্রত মণ্ডল তো জেলে ছিলেন। আছেন তো জেলে? বীরভূম জিতেছি আমরা?’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি এ-ও বলেন, ‘‘আপনি পরিশ্রম করে যদি সংগঠন তৈরি করতে পারেন, তা হলে জিতবেন। আরপ যদি পরিশ্রম করে সংগঠন তৈরি করতে না পারেন, যাকে খুশি অ্যারেস্ট করুন, কোনও দিন জিততে পারবেন না।’’ এ নিয়ে তৃণমূল যেমন ময়দানে নেমেছে, তেমনই বিজেপির মধ্যেও আলোচনা শুরু হয়েছে। জেলা স্তরের নেতারা নিজেদের মধ্যে ঘরোয়া আলোচনায় স্পষ্টই বলছেন, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার উপর ‘নির্ভরতা’ তৈরি করা হয়েছিল রাজ্য নেতৃত্বেরই একাংশের পক্ষ থেকে। এখন নিচুতলাকে দোষ দিয়ে লাভ নেই।
মঙ্গলবার রাজভবনের সামনে সেই প্রসঙ্গে শুভেন্দুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের রাজ্য সভাপতির বক্তব্যের পাল্টা আমি কেন বলব? পার্টিতে স্টেট প্রেসিডেন্ট ফাইনাল।’’ উপনির্বাচনে ‘অনিয়মের’ অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা। সেখান থেকে বেরিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন শুভেন্দু। তার পরে সুকান্তের বক্তব্যের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘ওঁর যা অভিজ্ঞতা, পর্যবেক্ষণ, উনি তা-ই বলেছেন। উনি মাঠে থাকা লোক। উনি ওঁর কথা বলেছেন। আমিও আমার অভিজ্ঞতা থেকে আমার মতো করে বলি।’’ এর পরেই সংবাদমাধ্যমের একাংশের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘আপনাদের রসদ-পুরিয়া আমি দেব না। আপনাদের কিছু লোক আছে, যাদের কাজ বিজেপির মধ্যে ঝগড়া লাগানো। কোনও ঝগড়া নেই। ও সব করে লাভ হবে না। বিজেপি ব্যক্তিবাদে বিশ্বাস করে না। আমরা সবাই দিল্লির নির্দেশে কাজ করি।’’ দলের একাংশের বক্তব্য, বুধবার লোকসভা ভোটের পরে রাজ্য বিজেপির কর্মসমিতির প্রথম বৈঠক। তার ঠিক আগেই সুকান্তের বক্তব্য নিয়ে যখন ‘বিতর্ক’ তৈরি হয়েছে, তখন শুভেন্দু তা নিয়ে মন্তব্য করে আর বিতর্ককে বাড়তে দিতে চাননি।