—প্রতীকী ছবি।
নির্দল হিসেবে প্রার্থী হওয়া কর্মীদের দলবিরোধী কাজের অভিযোগে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তা আমল দিতে নারাজবিক্ষুব্ধ ওই নেতা-কর্মীরা। তাঁদের পাল্টা দাবি, দল পাশে না থাকার কারণেই এই পথ নিতে হয়েছে। তাই দলের সিদ্ধান্ত নিয়ে চিন্তিত নন তাঁরা।
বিভিন্ন জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব জানান, রাজ্য নেতৃত্বের পাঠানো তালিকা অনুযায়ী সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। তবে এরই মধ্যে রবিবার অনেক জায়গায় ওই নির্দল প্রার্থীদের হয়ে প্রচারে নামতে দেখা যায় কোনও-কোনও তৃণমূল নেতাকেও। উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমানের মেয়ে আরজুনা বেগম জেলা পরিষদে নির্দল প্রার্থী হয়েছেন। তাঁর সমর্থনে এ দিন ইসলামপুরের রামগঞ্জে প্রচার করেন এলাকার তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী। তাঁর দাবি, ‘‘দল আমার সমর্থকদের প্রার্থী করেনি। তাই তাঁরা নির্দল হিসেবে লড়ছেন। ওঁদের হয়ে প্রচার করছি।’’ হামিদুলের বক্তব্য, ‘‘আমার মেয়ে গত পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল প্রার্থী হয়ে বহু ভোটে জিতেছিল। এ বার দল টিকিট দেয়নি। নির্দল প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত ওর নিজের।’’
দক্ষিণ দিনাজপুরে ১৯ জন নেতা-নেত্রীকে সাসপেন্ড করার কথা জানিয়েছে তৃণমূল। তাঁদের মধ্যে দলের প্রাক্তন জেলা সাধারণ সম্পাদক সরফরাজ আলি কয়েক দিন আগেই কংগ্রেসে যোগ দিয়ে জেলা পরিষদের প্রার্থী হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘দল ছেড়ে দিয়েছি, তার পরে এই সাসপেন্ড হাস্যকর!’’ হুগলির শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়ার পিয়ারাপুর পঞ্চায়েতের তিন বারের তৃণমূল সদস্য অরুণকুমার গায়েন দলের প্রতীক না পেয়ে নির্দল হিসেবে লড়ছেন। তাঁরও দাবি, ‘‘দল বহিষ্কার করলে কিছু যায়-আসে না।’’ বলাগড়ের বেশ কিছু ‘গোঁজ’ প্রার্থীরও দাবি, দলের সিদ্ধান্তে চিন্তিত নন তাঁরা।
বীরভূমে ৩০ জনকে সাসপেন্ড করার কথা জানিয়েছে তৃণমূল। তাঁদের মধ্যে রাজনগরের ভবানীপুর পঞ্চায়েতের বিদায়ী উপপ্রধান বামাপদ ঘোষের দাবি, “দলে যোগ্য সম্মান না পেয়ে দু’বছর আগেই সরে এসেছি।’’ খয়রাশোলের লোকপুর পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান টুকুরানি মণ্ডল ও তাঁর স্বামী উজ্জ্বল মণ্ডল এ বার নির্দল প্রার্থী। তাঁদের ক্ষোভ, ‘‘দলের জন্য প্রচুর পরিশ্রম করেছি। কিন্তু দল তো দেখেনি।’’ খয়রাশোল পঞ্চায়েত সমিতির ‘বিক্ষুব্ধ’ প্রার্থী লক্ষ্মীকান্ত ভান্ডারিও বলেন, ‘‘দল পাশে ছিল না। সাসপেন্ড করলে কী আসে-যায়?’’
পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরি, রামনগর ও এগরায় মোট পাঁচ জন নির্দল প্রার্থীকে দল থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব জানান। নদিয়ায় ২১ জনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়া চলবে বলে তৃণমূল সূত্রের দাবি।