প্রতীকী চিত্র।
সারদা-কাণ্ডে রাজীব কুমারের গ্রেফতারি ও হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ কেন জরুরি, সে ব্যাপারে সিবিআইকে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে হবে বলে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট।
রাজীব কুমারের আগাম জামিন খারিজ করতে সিবিআই সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানিয়েছিল। আজ এই বিষয়ে রাজীবের বক্তব্য জানতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্ট নোটিস জারি করেছে। একই সঙ্গে প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবডে জানিয়েছেন, রাজীবের গ্রেফতারি কেন জরুরি, সিবিআইকে সে বিষয়ে আদালতকে সন্তুষ্ট করতে হবে। সিবিআইয়ের আইনজীবী সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘আমাদের সন্তুষ্ট করতে হবে যে ওঁর গ্রেফতারি ও হেফাজতে নিয়ে জেরা প্রয়োজন।’’
গত ১ অক্টোবর কলকাতা হাইকোর্ট রাজীবের আগাম জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে। তার আগে প্রায় কুড়ি দিন সিআইডি-র প্রধানকে জনসমক্ষে দেখা যায়নি। তাঁকে সারদা কাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিস পাঠিয়েছিল সিবিআই। কিন্তু রাজীব হাজিরা না দিয়ে ‘নিরুদ্দেশ’ হয়ে যান। হাইকোর্টে আগাম জামিন পাওয়ার পরে ফের জনসমক্ষে আসেন রাজীব। সিবিআই তাঁর আগাম জামিন খারিজ করতে আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে পেশ করা পিটিশনে বলেছিল, আগাম জামিন মঞ্জুর হওয়ার আগে রাজীব দীর্ঘদিন ফেরার ছিলেন। আজ প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘আমরা নোটিস জারি করছি, কারণ এই ব্যক্তির সম্পর্কে অভিযোগ করা হয়েছে তিনি দীর্ঘ সময় ফেরার ছিলেন। কিন্তু তার অন্য কারণও থাকতে পারে।’’
আরও পড়ুন: সর্বক্ষণের দেহরক্ষী পাবেন রাজীবের স্ত্রী
রাজীবকে গ্রেফতার করা যাবে না বলে আদালতের ‘রক্ষাকবচ’ উঠে যাওয়ার পরেই সিবিআই তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছিল। রাজীব নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়ায় কলকাতা থেকে বিভিন্ন জেলার হোটেল, রিসর্ট, বহুতল এমনকি নার্সিংহোমেও তল্লাশি চালায় সিবিআই। কিন্তু রাজীব ‘অন্তরাল’ থেকেই আগাম জামিনের আবেদন করেন। বিশেষ আদালত, বারাসত জেলা আদালত ও সব শেষে আলিপুর জেলা আদালতে তাঁর আর্জি খারিজ হয়ে যায়। শেষে রাজীবের স্ত্রী সঞ্চিতা কুমার কলকাতা হাইকোর্টে তাঁর আগাম জামিনের আবেদন জানান। তা মঞ্জুর হয়।
তাৎপর্যপূর্ণ হল, সিবিআই রাজীবের আগাম জামিন খারিজ করতে তিন দিন পরেই, অর্থাৎ ৪ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টে মামলা ঠুকেছিল। কিন্তু তার পরে এ নিয়ে কোনও তৎপরতা দেখায়নি। জরুরি ভিত্তিতে শুনানির আর্জিও জানায়নি। সাধারণ নিয়মেই ওই মামলা গত সোমবার শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত হয়। সে দিনও সলিসিটর জেনারেল মহারাষ্ট্রের মামলার জন্য ব্যস্ত ছিলেন বলে সরকারি আইনজীবীরাই শুনানি পিছিয়ে দিতে বলেন।
আজ সলিসিটর জেনারেল অভিযোগ করেন, সারদা-কাণ্ডে তদন্তে পাওয়া বহু তথ্যপ্রমাণ রাজীব কুমার লুকিয়ে রেখেছেন বা নষ্ট করে ফেলেছেন। তিনি তদন্তে সহযোগিতা করেননি। সে কারণেই তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করা দরকার। প্রধান বিচারপতি জানান, এ বিষয়ে আদালতকে সন্তুষ্ট করতে হবে।