রাজ্যপালের ভূমিকার সমালোচনা সুপ্রিম কোর্টের। — ফাইল চিত্র।
উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের ভূমিকার আবার সমালোচনা করল সুপ্রিম কোর্ট। কেন রাজ্যকে চিঠি দিয়েছিল রাজভবন, সেই চিঠির বিষয়বস্তু কী, জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্ট। ১ ডিসেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি।
উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য। শেষ বার মামলাটি শুনানির জন্য যখন উঠেছিল, তখন সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, আর কত দিন রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অস্থায়ী উপাচার্যেরা থাকবেন? স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করতে হবে। এর পরেই নবান্নের তরফে রাজ্যপালকে জানানো হয়, আলোচনার মাধ্যমে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়া হোক। কয়েক দিন পর রাজ্যপালের তরফে আবার নবান্নকে চিঠি দেওয়া হয়। তাতে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্ট যে বলেছে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে আলোচনা করতে, তা তাদের অর্ডার কপিতে লেখা নেই। তা হলে কেন উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করা হবে!
রাজ্যপালের আইনজীবী সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানিতে বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চে রাজ্যপালের নবান্নকে পাঠানো ওই চিঠির কথা জানান রাজ্যের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। তিনি জানান, ৬ নভেম্বর ওই চিঠি দেয় রাজভবন। এর পরেই সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যপালের আইনজীবীকে চিঠির বিষয়ে জিজ্ঞেস করে। বেঞ্চ বলে, সত্যিই কি চিঠি দেওয়া হয়েছে? রাজ্যপালের আইনজীবী জানান, তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না। অন্য কোনও বিষয়ে চিঠি দেওয়া হতে পারে। এর পরেই সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যপালের আইনজীবীকে জিজ্ঞাসা করে, ওই দিন রাজভবন কেন চিঠি দিয়েছিল? তার বিষয়বস্তু কী ছিল?
গত ৬ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, রাজ্যপাল আর অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করতে পারবেন না। শীর্ষ আদালতের ওই বেঞ্চ আরও জানিয়েছে, সম্প্রতি রাজ্যপাল যাঁদের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করেছেন, তাঁরা কোনও সুযোগ-সুবিধা পাবেন না। তাঁরা নিতে পারবেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তও। তার আগে সুপ্রিম কোর্ট মৌখিক ভাবে জানিয়েছে, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগের জন্য একটি সার্চ কমিটি গঠন করা হবে। ২৫ সেপ্টেম্বর এই কমিটি গঠন করে দেবে সুপ্রিম কোর্ট। সার্চ বা অনুসন্ধান কমিটির সদস্য মনোনয়নের জন্য রাজ্য, রাজ্যপাল এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)—তিন পক্ষকেই পাঁচটি নাম জানাতে বলেছে আদালত। সদস্যদের নাম জানার পর প্রত্যেক পক্ষ থেকে সমান সংখ্যক সদস্য নিয়ে তিন জনের সার্চ কমিটি গঠিত হবে। এই কমিটিই স্থায়ী উপাচার্যের নাম প্রস্তাব করবে।