প্রতীকী ছবি।
করোনা অতিমারির কঠিন সময় পার করে সবে স্কুলগুলিতে পড়ুয়াদের কোলাহলের ছবি ধরা পড়েছিল। কিন্তু ক’দিন যেতে না যেতেই তীব্র গরমে নির্ধারিত সময়ের আগেই ফের ঝাঁপ বন্ধ হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে। অসহনীয় গরমে পড়ুয়াদের কথা মাথায় রেখে এ বার গ্রীষ্মের ছুটি এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। নবান্নের এই সিদ্ধান্ত ঘিরে প্রশ্ন উঠেছিল বিভিন্ন মহলে। সেই ‘সমালোচনা’র রেশ কাটতে না কাটতেই ফের স্কুলে গরমের ছুটি নিয়ে দ্বিমত তৈরি হল। দহনজ্বালার দাপট না কমায় গ্রীষ্মের ছুটির মেয়াদ আরও ১১ দিন বাড়ানো হয়েছে। আগামী ২৬ জুন পর্যন্ত স্কুল বন্ধ থাকবে। গরমের ছুটি বাড়ানো নিয়ে ফের প্রশ্নের মুখে পড়েছে শিক্ষা দফতরের ভূমিকা।
অসহ্য গরমে পড়ুয়াদের সুস্থতার কথা মাথায় রেখে ছুটি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কি আদৌ যুক্তিযুক্ত? এই প্রসঙ্গে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডলের মতে, গরমের ছুটি বাড়িয়ে সরকার আদতে হঠকারিতার পরিচয় দিল। আরও কয়েক দিন অপেক্ষা করতে পারত। এই সপ্তাহের শেষ পর্যন্ত ছুটি বাড়িয়ে পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে পারত। বারবার এটা করার ফলে সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থার উপর সাধারণ মানুষের আস্থা হারিয়ে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, ১৫ জুন পর্যন্ত স্কুলগুলিতে গরমের ছুটির কথা আগে জানানো হয়েছিল।
এদিকে, গ্রীষ্মের ছুটি নিয়ে সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল শিক্ষক সমিতি। এই সংগঠনের সভাপতি অশোক রুদ্র বলেছেন, ‘‘যে অস্বাভাবিক গরম পড়েছে,তাতে শিশুদের স্বাস্থ্যের দিকটি নজর দেওয়া প্রয়োজন। সেই কথা মাথায় রেখে রাজ্য সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা যুক্তিযুক্ত বলে মনে করছি।’’
শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, রবিবার উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটিতে দণ্ড মহোৎসবে প্রচণ্ড গরমে প্রাণহানি এবং অনেকের অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনার পরে মুখ্যমন্ত্রী স্কুলের পড়ুয়াদের সুরক্ষার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেন। তাঁর মনে হয়েছে, এমন ভয়াবহ গরম চলতে থাকলে স্কুলপড়ুয়ারা খুবই অসুবিধায় পড়বে। তার পরেই তিনি শিক্ষামন্ত্রীকে ব্যবস্থা নিতে বলেন। উত্তরবঙ্গে বর্ষা পৌঁছে গেলেও দক্ষিণবঙ্গ এখনও বর্ষার মুখ দেখেনি। বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিতে সাময়িক স্বস্তি মিললেও গরম থেকে রেহাই মিলছে না। আর সে কারণেই স্কুলে ছুটির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।