(বাঁ দিকে) তৃণমূল সাংসদ মালা রায়, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান (ডান দিকে)। —ফাইল ছবি।
গত দু’বছরে রাজস্থানের কোটায় আইপিএস এবং আইএএস পরীক্ষার জন্য প্রশিক্ষণরত অনেক ছাত্রছাত্রী আত্মঘাতী হয়েছেন। সেই প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ মালা রায় একাধিক প্রশ্ন করেছিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের উদ্দেশে। মালার প্রশ্নে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান লিখিত জবাব দিয়েছেন সংসদে।
মালার প্রশ্ন ছিল, গত দু’বছরে কোটায় কত জন ছাত্রছাত্রী আত্মঘাতী হয়েছেন? এ নিয়ে কি কেন্দ্রের তরফে কোনও সত্য অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়েছিল? কোটায় আইপিএস এবং আইএএসের জন্য প্রশিক্ষণরত ছাত্রছাত্রীদের জন্য সরকার কী প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছে, সে প্রসঙ্গেও বিস্তারিত জানতে চেয়েছিলেন দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল সাংসদ।
জবাবে ধর্মেন্দ্র শুরুতেই স্মরণ করিয়ে দিতে চেয়েছেন, শিক্ষা কেন্দ্র এবং রাজ্য ‘যৌথ’ তালিকার অন্তর্ভুক্ত। এবং এ-ও বাস্তব যে, দেশের বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রশাসনের অধীনে রয়েছে। গত দু’বছরে কোটায় আত্মঘাতী ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কত, সে ব্যাপারে লিখিত জবাবে সংখ্যার উল্লেখ করেননি কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী। বরং ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর ওয়েবসাইটের ‘লিঙ্ক’ উল্লেখ করে বলা হয়েছে, সেখানেই আত্মহত্যা, দুর্ঘটনা, অস্বাভাবিক মৃত্যু সংক্রান্ত তথ্য রয়েছে। যে তথ্য পাঠায় রাজ্য প্রশাসন।
কোটায় ধারাবাহিক আত্মহত্যার ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কোনও তথ্য অনুসন্ধান দল গড়েছিল কি না, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনও জবাব দেননি ধর্মেন্দ্র। তবে জাতীয় শিক্ষানীতির উল্লেখ করে বলা হয়েছে, দেশের সর্বত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকটি নজরে রাখার কথা রয়েছে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যাতে মনোবিদের সাহায্য নেয়, তারও উল্লেখ রয়েছে। কারণ, এই পর্বেই ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে কেরিয়ার সংক্রান্ত প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পায়। নানা কারণে তা থেকে তৈরি হয় হতাশা। কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের দাবি, সে কারণেই তারা বিষয়টিকে ‘স্পর্শকাতর’ ভাবেই দেখছে। সেই মতো পদক্ষেপও করা হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক ‘মনোদর্ণ’ নামে একটি উদ্যোগও শুরু করেছে বলে তৃণমূল সাংসদ মালার প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছেন ধর্মেন্দ্র। পাশাপাশিই, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ছাত্রছাত্রীদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে সম্প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে নির্দেশিকা জারি করেছে। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে যাতে মানষিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেল থাকে, তা-ও নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে ইউজিসির নির্দেশিকায়। শুধু উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানই নয়, কোচিং সেন্টারেও যাতে মানসিক স্বাস্থ্য দেখভালের জন্য পরিকাঠামো থাকে, তা-ও নিশ্চিত করতে বলেছে কেন্দ্র। কোন ছাত্র কবে ভর্তি হচ্ছেন, কবে প্রতিষ্ঠান ছাড়ছেন, ফি কত— যাবতীয় তথ্য সংরক্ষিত রাখতে হবে। বিহার, মণিপুর, গোয়া, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে কোচিং সেন্টারের জন্য নির্দিষ্ট আইন রয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী।