ডায়াবিটিসের লক্ষণগুলি চিনে নিন আগেভাগেই। ছবি: সংগৃহীত।
ডায়াবিটিস শরীরে বাসা বাঁধার অর্থই হল জীবনে চলে আসে একাধিক বিধিনিষেধ। একটু বেনিয়ম হলেই এই রোগের হাত ধরে আরও হাজারটা রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়, ক্ষতি হয় বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের। সাধারণত ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হলে তা প্রথম অবস্থাতেই টের পাওয়া কঠিন। রক্ত পরীক্ষা করিয়ে তা বুঝে নিতে অনেকটা সময় পেরিয়ে যায়। যে কোনও ক্রনিক অসুখের ক্ষেত্রে যত আগে অসুখের উপস্থিতি টের পাবেন, ততই ভাল। রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে তা বেড়ে যাওয়ার উপসর্গগুলিকেও চেনা অত্যন্ত জরুরি। নইলে আগাম সতর্কতা অবলম্বন করা অসম্ভব। সাধারণত, শরীরের বেশ কিছু লক্ষণের বিষয়ে সজাগ থাকলেই এই অসুখ সম্পর্কে সচেতন হওয়া যায়।
কোন কোন উপসর্গ দেখলেই সতর্ক হবেন?
১) শীতের আমেজেও অতিরিক্ত জল তেষ্টায় জিভ শুকিয়ে আসছে ঘন ঘন? এতটাই প্রবল হয়ে ওঠে এই সমস্যা যে, রাতেও বার বার ঘুম ভাঙে জলের প্রয়োজনে? শরীরে হঠাৎ এই সমস্যা দেখলে তা হতেই পারে ডায়াবিটিসের লক্ষণ। এই অসুখে শরীরের কোষ থেকে ফ্লুইড নেয় কিডনি। ফলে শরীরে জলের ঘাটতি দেখা যায়।
২) ডায়াবিটিসের ক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়ে দৃষ্টিশক্তিতে। ঘোলাটে দেখা বা কোনও লেখার লাইন ভুল দেখা বা ভুল পড়ার সমস্যা তৈরি হলে সচেতন হতে হবে।
৩) রক্তের অতিরিক্ত শর্করা বার করে দেওয়ার জন্য শারীরিক প্রক্রিয়া কিডনিতে চাপ দেয়। ফলে অনেকের ক্ষেত্রে ঘন ঘন প্রস্রাব পায়। রক্তে শর্করা বে়ড়ে যাওয়ার কারণে ইস্ট সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ে।
৪) হাত-পায়ে ঝিঁঝি ধরা ও সঙ্গে তা অবশ হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আরও নানা কারণে এমনটা ঘটতেই পারে। তবে ডায়াবিটিস দানা বাঁধলেও এমনটা হয়।
৫) ব্যায়াম বা শরীরচর্চা না করেই কি ওজন হ্রাস পেয়েছে অনেকটা? আবার অনেকের ক্ষেত্রে অত্যধিক ওজন বেড়েও যায়। তাই হঠাৎ ওজন হ্রাস পেলে বা বৃদ্ধি পেলে সতর্ক হোন। শরীরের কোনও অংশে ঘা শুকোতে দেরি হচ্ছে? তা হলেও অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ দিন।
ডায়াবিটিসের ঝুঁকি এড়াবেন কী ভাবে?
১) সবার আগে ডায়েটে নজর রাখতে হবে। ফল, শাকসব্জি বেশি করে ডায়েটে রাখতে হবে। বাজারের ভাজাভুজি, প্রক্রিয়াজাত মিষ্টিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
২) নিয়ম করে শরীরচর্চা করতে হবে। শরীরচর্চার সময় না হলেও দিনে অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করা জরুরি।
৩) ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি।
৪) নিয়ম করে ছ’মাস অন্তর অন্তর রক্তের শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করতে হবে।
৫) ঘুমের সঙ্গে কোনও রকম আপস নয়। দিনে সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুম জরুরি।