সুমন দাস
ডেঙ্গিতে এ বার মৃত্যু হল হুগলির নবম শ্রেণির এক ছাত্রের। মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতার একটি নার্সিংহোমে মারা যায় চণ্ডীতলা-১ ব্লকের গঙ্গাধরপুর পঞ্চায়েতের উত্তর শান্তিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সুমন দাস (১৫) নামে ওই ছাত্র। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে সে জ্বরে ভুগছিল।
চলতি বছরে ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি দেখা গিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনায়। ইতিমধ্যে ওই জেলায় জ্বর-জেঙ্গিতে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। হুগলিতে ডেঙ্গি-মৃত্যুর ঘটনা এ বছরে এই প্রথম। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই ছাত্রটি কলকাতায় মারা গিয়েছে। আমরা স্থানীয় ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের থেকে ওই এলাকার পরিস্থিতি জেনে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।’’ উত্তর শান্তিপাড়ার পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলের জ্যোতির্ময় আদক এবং সুমনের বাবা স্বপন দাস এই মৃত্যুর জন্য এলাকার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশকে দায়ী করেছেন।
জ্যোতির্ময়ের অভিযোগ, ‘‘আমি বারবার পঞ্চায়েতে এলাকা পরিষ্কার রাখা এবং পুকুর সংস্কারের জন্য জানিয়েছি। সময়মতো আমার কথাকে গুরুত্ব দিলে এই ঘটনা এড়ানো যেত।’’ স্বপন বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি আসেন ঠিকই। কিন্তু এখানে পঞ্চায়েতের তরফে আবর্জনা পরিষ্কার করা হয় না। সে কারণেই মশার উৎপাত। এলাকার পুকুরগুলোর মারাত্মক অবস্থা।’’ পঞ্চায়েত প্রধান কাবেরী দাস অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁর দাবি, ‘‘ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা প্রচার জারি রয়েছে। নিয়মিত মশা মারার তেল ছড়ানো হয়। আবর্জনা সাফাই এবং পুকুর সংস্কারও করে দেওয়া হবে।’’
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সুমন শিয়াখালার বেণীমাধব হাইস্কুলে পড়ত। বেশ কয়েকদিন ধরে জ্বর না-কমায় গত শনিবার তাকে শিয়াখালার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু অবস্থা ভাল নয় দেখে অভিভাবকেরা সোমবার সুমনকে ডানকুনির একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যান। সেই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ তাঁদের সতর্ক করে দ্রুত সুমনকে কলকাতার কোনও হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। সে দিনই কলকাতার তেঘরিয়ার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। সোমবার তার প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত বের হয়। মৃত্যুর শংসাপত্রে সেখানকার চিকিৎসকেরা ডেঙ্গির কথাই লিখেছেন। বুধবার শান্তিপাড়ায় অবশ্য পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে মশা মারার তেল ছড়ানো হয়। সুমনদের পড়শি দিলীপ দাস বলেন, ‘‘আগে থেকে তেল ছড়ানো হলে হয়তো ছেলেটাকে বাঁচানো যেত।’’