সভায় অনুব্রত মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র
ভোটে ‘কৌশল’ পাল্টানো হবে, দলের কর্মিসভায় মন্তব্য করলেন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। ঘরে বসেই ভোট ‘বুঝে নেবেন’, মঙ্গলবার কেতুগ্রাম ২ ব্লকের কিসানমান্ডিতে আয়োজিত সভায় এমন দাবি করলেন তিনি। সেই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, ‘‘করোনার সংক্রমণের জন্য দায়ী নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ। ওরা ট্রাম্পকে (ডোনাল্ড) দেশে এনে করোনা ছড়াল। আর আমাদের রাজ্যের মানুষকে পরিযায়ী শ্রমিক তকমা দিয়ে দুর্ব্যবহার করল।’’ বিজেপি নেতাদের পাল্টা দাবি, তাঁদের দলের জনপ্রিয়তা বাড়তে দেখে আতঙ্কে এ ধরনের মন্তব্য করা হচ্ছে।
অনুব্রত পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোট ও আউশগ্রামে দলের পর্যবেক্ষক পদে রয়েছেন। এ দিন কেতুগ্রাম ২ ব্লকের সাতটি পঞ্চায়েত এবং কাটোয়া ১ ব্লকের শ্রীখণ্ড ও কোশিগ্রাম পঞ্চায়েতের নেতা-কর্মীদের নিয়ে সভা করেন তিনি। ছিলেন কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজ, বীরভূম জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি রানা সিংহ, বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল, কেতুগ্রাম ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি তরুণ মুখোপাধ্যায়েরা।
সভায় বিজেপিকে আক্রমণ করেন অনুব্রত। ট্রাম্প-করোনা- পরিযায়ী শ্রমিক নিয়ে বিজেপির শীর্ষ নেতাদের বেঁধার ফাঁকেই কর্মীদের বলেন, ‘‘এ বার ভোটে ‘পলিসি’ পাল্টাব। ঘরে বসে কৌশল পরিবর্তন করে ভোট হবে। অঞ্চল সভাপতি আর পর্যবেক্ষকদের কাছ থেকে ভোটটা আমি বুঝে নেব।’’ যদিও সেই ‘কৌশল’ নিয়ে বিশদে কিছু খোলসা করেননি তিনি।
বিজেপিকে আক্রমণের পাশাপাশি, দলের কর্মীদেরও দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সতর্ক করেন অনুব্রত। কাটোয়া ১ ব্লকের শ্রীখণ্ড অঞ্চল কোশিগ্রাম অঞ্চলে দুর্নীতির অভিযোগ তাঁর কানে পৌঁছেছে দাবি করে সেখানকার নেতাদের তিনি বলেন, ‘‘আমি বোলপুর থেকে সব খবর পাচ্ছি। পয়সাটাই সব কিছু নয়। মানুষের জন্য কাজ করুন। না হলে কিন্তু সরিয়ে দেব।’’ বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজকে তিনি নির্দেশ দেন, প্রত্যেক অঞ্চলে এক জন করে পর্যবেক্ষক রাখতে হবে। প্রধান, পর্যবেক্ষক ও অঞ্চল সভাপতিদের নিয়ে পরে সভা করবেন বলে জানান তিনি।
এ দিন সভার জন্য বড় প্যান্ডেল করা হয়। তবে দূরত্ববিধি কার্যত মানা হয়নি বলে অভিযোগ কর্মীদের একাংশের। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে তৃণমূল সভা করেছে, এমন অভিযোগ তুলেছেন এলাকার বিরোধী দলের নেতারাও। সভায় এসে অনুব্রতও কর্মীদের পরস্পরের মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্ব রাখার পরামর্শ দেন। তবে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে সভা করার কথা মানতে চাননি তৃণমূল নেতারা।
অনুব্রতর মন্তব্য প্রসঙ্গে বিজেপির পূর্ব বর্ধমান জেলা (কাটোয়া) সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষের প্রতিক্রিয়া, ‘‘করোনা নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্র নানা পদক্ষেপ করেছে। তৃণমূল স্বাস্থ্যবিধি শিকেয় তুলে রাজনীতি করছে। আমাদের ‘গৃহসম্পর্ক যাত্রা’ কর্মসূচির সাফল্য দেখে ওঁরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। সে কারণেই ভুল বকছেন।’’