গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বিজেপি-র সংখ্যালঘু নেতাকর্মীদের ক্ষোভ আগেই প্রকাশ্য এসেছিল। এ বার শুরু হল ভাঙন। সোমবার দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কাছে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিলেন দলের সংখ্যালঘু মোর্চার সহ-সভাপতি কাশেম আলি। একদা মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ কাশেমের দাবি, আরও অনেককে নিয়ে তিনি তৃণমূলে যোগ দিতে চান। একই দাবি করেছেন বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া কবিরুল ইসলাম। তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক কবিরুলও ইতিমধ্যে বিজেপি-র সদস্য পদ ছেড়েছেন। তৃণমূলে যোগদানের তৎপরতাও শুরু করেছেন। দু’জনেই আপাতত তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের দ্বারস্থ।
বিজেপি ছেড়ে সংখ্যালঘু নেতাদের তৃণমূলে ফিরতে চাওয়ার প্রসঙ্গে কুণাল বলেন, ‘‘ওঁরা দু’জন এসেছিলেন আমার কাছে। কিন্তু আমি তো কোনও কথা দিতে পারি না। আরও অনেকেই আসছেন। নানা ভাবে যোগাযোগ করছেন। কেউ কেউ ভুল হয়ে গেছে বলে কান্নাকাটিও করছেন। কিন্তু যাঁরা ভোটের আগে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন তাঁদের নিয়ে দল এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।’’
কিন্তু কেন এঁরা এখন তৃণমূলে ফিরতে চাইছেন। কাশেম ও কবিরুলের বক্তব্য মোটামুটি এক। ২০১৭ সালে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়া কাশেম বলেন, ‘‘বিজেপি-তে থেকে সংখ্যালঘুদের জন্য কাজ করা সম্ভব নয়। তাই আমি একা নই, মুসলিম সম্প্রদায়ের অনেকেই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য। আশা করছি আমাদের ক্ষমা করে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।’’ কবিরুলের বক্তব্য, ‘‘বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পরে আমাকে সে ভাবে কাজেই লাগানো হয়নি। আর সিবিআই দিয়ে বিজেপি যে ভাবে ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্রদের গ্রেফতার করিয়েছে সেটা অন্যায়। অথচ বিজেপি-তে যোগ দেওয়া অনেকের সম্পর্কে একই অভিযোগ থাকা সত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’’
শুধু এই দু’জনেই নন, ইতিমধ্যেই উল্টো সুরে কথা বলতে শুরু করেছেন গত ডিসেম্বরে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া পুরশুড়ার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক শেখ পারভেজ রহমান। এঁদের মধ্যে কাশেম যেহেতু অনেক আগে বিজেপি-তে এসেছেন এবং সংখ্যালঘু মোর্চার রাজ্য নেতা হিসেবে কাজ করছিলেন, তাই তিনি বড় ভাঙন ধরাতে পারেন বলেই আশঙ্কা গেরুয়া শিবিরের। যদিও তা বাইরে স্বীকার করতে রাজি নন রাজ্য নেতারা। রাজ্য বিজেপি-র অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, ‘‘কে কী বলছেন বা বলেছেন আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে জানাতে পারব।’’